পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
৮৬

 দিব্যেন্দু হাসল, এতক্ষণের মধ্যে এই তার মুখে একটু হাসি দেখলেম, অথচ এই সেই দিবু, যে একদণ্ড না হেসে আর পরকে না হাসিয়ে থাকতেই পারতো না!

 বললে, “তাও আবার একটা বাজে ডাক্তার নয়। মহৌষধি আবিষ্কারক মহর্ষিস্থানীয় মহাশয় মহান্ ব্যক্তি!

 “কি যে তুই বলিস্! ঐটুকুতেই ‘মহর্ষি’ বনে গেলাম? ঋষি সম্বন্ধে কল্পনার দৌড় ত দেখছি তোর সুবিধের নয়। কথায় বলে, ‘মোল্লার দৌড় মসজিদের দরজা পর্য্যন্ত’।”

 দুজনেই একত্রে হেসে উঠলাম, এবার বোধ হল সে যেন একটু প্রাণখোলা হাসিই হাসল, যেন বহু-বিস্মৃত অতীত দিনের যৌবনস্বপ্নের রঙ্গীন ছায়া তার মুষড়ে-পড়া মনটাকে এক মুহূর্ত্তের জন্য অন্ততঃ পুরনো রং ফিরিয়ে দিল। তারপর দুজনে সেই অতীত কালেই হঠাৎ পশ্চাদ্‌বর্ত্তন করলেম। আমার মানব-চিত্তের সাইকোলজি-ঘাঁটা মন সেই ক্ষণেই তার মানসিক ডিপ্রেসনের মহৌষধি আবিষ্কার করে ফেলেছিল। বর্ত্তমানকে যতটা সম্ভব চাপা দিয়ে পুরাতনকে জাগাতে পারলে এই অতি সৌভাগ্যে দুর্ভাগা (জানি না আমার এ কল্পনাটা সত্য কিনা!) বাল্যবন্ধুটির অকাল-বার্দ্ধক্যের ভারে নুয়ে পড়া দেহমনকে হয়ত কিছুমাত্রায় তাজা করে দিয়ে যেতে পারবো। বর্ত্তমান যে কোন কারণেই হোক তার সুখের বা শান্তির নয়।

 আর তার স্ত্রীই যে সেই অজ্ঞাত অশান্তির উৎস, তাতেও সেই ক্ষণেই আমার দৃঢ়প্রত্যয় জন্মে গেল।

চার

 কিন্তু পরের দিন সকাল বেলায় খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে উঠতেই খোলা জানলা দিয়ে দিবুর দিব্যোদ্যান যখন আমায় সাগ্রহে আহ্বান