পাতা:খনার বচন - রামলাল শীল.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহেন্দ্রক্ষণে যাত্রা করিয়াছে, আর তাহাদিগকে কিছুতেই রাখা যাইবে না, রাক্ষসপ্রধান বুঝিলেন ; কাজেই একজন রাক্ষস ভৃত্যকে উভয়কে সমুদ্রপারে দিয়া আসিবার জন্য আজ্ঞা করিলেন এবং ইহাও বলিয়া দিলেন, কুলে উঠিয়া মিহিরকে কোনপ্রশ্ন করিবে, যদি মিহির তাঁহার সদুত্তর দিতে পারে, তবেই “ভূতত্ত্ব” “খতত্ত্ব” ও “পাতাল তত্ত্ব” তিনখানি শাস্ত্র গ্রন্থই প্রদান করিবে, অন্যথায় নহে—মাত্র “ভূতত্ত্ব” ও “খতত্ত্ব” দিয়া “পাতালতত্ত্ব” ফিরাইয়া লইয়া আসিবে। যখন রাক্ষসভৃত্য পরপারে তাহাদিগকে লইয়া উত্তীর্ণ হইল একটা গাভীকে প্রসব বেদনা পাইতেছে দেখিয়া রাক্ষস প্রধানের কথিতমত মিহিরকে জিজ্ঞাসা করিল “বল দেখি ইহার শাবক শ্বেতবর্ণের কি কৃষ্ণবর্ণের হইবে ? মিহির গণনা করিলেন, বলিলেন, শ্বেতবর্ণের। কিন্তু অবিলম্বে প্রসূত হইৰামাত্র শাবক কৃষ্ণবর্ণ বলিয়াই অনুমিত হইল। রাক্ষস প্রভুর আজ্ঞানুসারে কাজেই পাতালতখানি আপনার নিকট রাখিয়া, কেবল “ভূতত্ত্ব” “থতত্ত্ব” তাহাকে প্রদান করিয়া চলিয়া যাইল । মিহির লজ্জায় নতমুখ, হস্তস্থ পুস্তক দ্বয়ও সমুদ্রজলে ফেলিয়া দিলেন। খনা এ সময় তাহার নিকট ছিলেন না, স্বভাবের শােভা দেখিবার বাসনার একটু দূরে গমন করিয়া পদচারণ করিতেছিলেন। আসিয়া সকল কথা শুনিয়া বলিলেন, করিয়াছ কি? পুস্তক কুড়াইয়া লও, কুড়াইয়া লও। শাবক এখনই শ্বেতবর্ণের দেখিতে পাইবে।” বাস্তবিকই শাবক শ্বেতবর্ণ সৰ্বাঙ্গ লালে মাথা থাকা প্রযুক্ত ঐ প্রকার কৃষ্ণবর্ণ দেখিতে হইয়াছিল। মুহুৰ্ত্তমধ্যে গাভী বৎসের গা চাটিয়া প্রকৃত বর্ণ প্রকাশ করিল।