२ খাদে ডাকাত্তি ঐখানেই কাজ করতে আসত। আমি ছিলাম, খাদের ক্যাসিয়ারবাবু। অনেক দিন বিশ্বস্তভাবে কাজ করে এসেছি, তা ছাড়া ধৰ্ম্মভীরু লোক ; সেইজন্যই আমাদের সাহেব, টেনডেনের আমার উপর ছিল অগাধ বিশ্বাস । প্রথম প্রথম প্রতিদিনকার কয়ল। বিক্রীর টাকা রাণীগঞ্জের থানায় জমা দেওয়া হ’ত । কিন্তু তাতে ছিল অনেক অস্থবিধা ; সেইজন্য একদিন সাহেব আমাকে ডেকে ব’ললে,—বাবু! তুমি এই খাদে অনেকদিন কাজ করছ, তোমাকে ছাড়া আর কারও ওপর আমার বিশ্বাস নাই ; আমি তোমাকেই বলছি, তুমি আমার একটা কথা রাখবে ? একে রাজার জাত, তায় আবার এমন মিষ্টি কথা ; আহিলাদে আটখানা হ’য়ে ইংরেজি বাংলায় মিশিয়ে কোনরকমে ভাব প্রকাশ করলাম,—হুজুরের কাজে আমি প্রাণ পৰ্য্যন্ত দিতে প্রস্তুত আছি। সাহেবও এই চাইছিল বোধ হয় ; আমার প্রতিশ্রুতি পেয়ে ব’লতে সুরু করলে—প্রতিদিনকার কয়লাবিক্রীর টাকা, আমি তোমার কাছেই জমা রাখতে চাই বাবু ; তোমার এতে আপত্তি নেই ত ? প্রথমটা সাহেবের কথায় যে ভাবে উৎসাহিত হ’য়ে উঠেছিলাম সাহেবের প্রস্তাবের পর সেই উৎসাহ, ভয়ে আকাশগামী ফানুসের মত এক মুহুর্তে উবে গেল। কারণ, আমি থাকতাম, খাদের কোয়ার্টারে । চারপাশে দু’চারজন বাবু ও সাহেবদের কোয়ার্টার ; বাকী সব কুলীদের বস্তি। অত টাকা এমন ক্ষেত্রে নিজের
পাতা:খাদে ডাকাতি - ধর্ম্মদাস মিত্র.pdf/১০
অবয়ব