তেছে; কেহ আবার গরুর পাল লইয়া কোন প্রকাণ্ড বৃক্ষের ছায়ায় আশ্রয় লইতেছে। এখন প্রায়ই সহরে থাকা যায়; ঘর, বাড়ী, কাষ্ঠই আমাদের দৃষ্টিগোচর হইয়া থাকে। সুতরাং প্রভাতের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখিয়া, আমার মনে কেমন এক অভূতপূর্ব্ব আনন্দের উদয় হইল—বাল্যকালের কথা মনে পড়িল।
কিছুদূর যাইলে পর, লালমোহন বলিয়া উঠিলেন, “আজ প্রাতে এক নূতন খবর পাইলাম।”
আমার কৌতুহল জন্মিল। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি সংবাদ লালমোহন বাবু?”
লা। জমীদার মহাশয় বাঁচেন কি না?
আ। সে কি! কাল রাত্রে ত সেরূপ কোন সাংঘাতিক পীড়ার কথা শুনি নাই।
লা। না শুনিলেও তাঁহার জীবনের আর কোন আশা নাই।
আ। তাঁহার বয়স কত?
লা। ষাট বৎসর হইবে।
আ। কতদিন তিনি এখানকার জমীদার হইয়াছেন?
লা। অধিক দিন নহে। এখানকার পূর্ব্ব জমীদারের অবস্থা নিতান্ত মন্দ হওয়ায়, এবং তাঁহার কোন উত্তরাধিকারী না থাকায়, তিনি এই জমীদারী বিক্রয় করেন। কেশব বাবুই উহা ক্রয় করেন এবং সেই অবধি তিনি এখানকার জমীদার হইয়াছেন।
আ। সে কতদিনের কথা?
লা। ঠিক বলিতে পারিলাম না। শুনিয়াছি, প্রায় পনের ষোল বৎসর পূর্ব্বে কেশব বাবু এই জমীদারী ক্রয় করেন।