পাতা:খুনী কে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দারোগার দপ্তর, ১৬৫ সংখ্যা।

 আমি সসম্ভ্রমে উত্তর করিলাম, “আজ্ঞা হাঁ, শুনিয়াছি।”

 সা। আমি এখন তোমার হাতে ইহার অনুসন্ধানের ভার দিতেছি, ইহার প্রকৃত অবস্থা কি, তাহা বাহির করিতে হইবে।

 আমার হাতে একটী কাজ ছিল। আবার সাহেবের হুকুম একেবারে অমান্য করিতেও সাহস করিলাম না। মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিলাম, “আমার হাতে―”

 আমার কথায় বাধা দিয়া সাহেব সহাস্যবদনে বলিলেন, “তোমার হাতে যে কাজ আছে, তাহাতে দুই চারি দিন বিলম্ব হইলেও ক্ষতি হইবে না। তুমি অগ্রে এই কার্য্যে প্রবৃত্ত হও এবং যত শীঘ্র পার, এই কাজ শেষ করিতে চেষ্টা কর।”

 সাহেবের কথায় মনে বড় দুঃখ হইল। ভাবিলাম, লোকে যে বলে, চাকরে আর কুকুরে কোন প্রভেদ নাই, তাহা সম্পূর্ণ সত্য। যখন চাকরের কার্য্য স্বীকার করিয়াছি, তখন আর দুঃখ করিলে চলিবে কেন। সাহেবের নিকট বিদায় লইয়া, এই নূতন কার্য্যের অনুসন্ধানের নিমিত্ত প্রস্থান করিলাম।

 সাহেব-প্রদত্ত কাগজখানি পাঠ করিয়া যাহা আমি অবগত হইতে পারিয়াছিলাম, তাহার একটু আভাষ এইস্থানে প্রদান করিতেছি।

 সহরতলীর এক স্থানের একজন আধুনিক জমিদারের নাম কেশবচন্দ্র দত্ত। এই কেশব বাবুর এক প্রজা সেদিন খুন হইয়াছে। প্রজার নাম দামোদর ঘোষ। দামোদরের একমাত্র পুত্র এখনও বর্ত্তমান, তাহার নাম যতীন্দ্র। স্থানীয় পুলিসের বিশ্বাস, যতীন্দ্রই পিতৃহত্যা করিয়াছেন। সুতরাং তিনি ধৃত হইয়াছেন। জমিদার মহাশয়ের সহিত দামোদরের বন্ধুত্ব থাকায়