ধার্য্য হইল, কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে তখনও বিবাহ হইল না। কোন না। কোন অছিলা করিয়া শোভন সিং বিবাহের দিন ক্রমাগত পিছাইয়া দিতে লাগিলেন। প্রায় আট মাস কাল এইরূপে অতিবাহিত হইল। পরে একদিন শোভন সিং বলিলেন যে, রূপসী ও বাড়ীর অন্যান্য লোকের চিকিৎসায় তাঁহার অনেক অর্থব্যয় হইয়া গিয়াছে। যদি আমি আরও তিন শত টাকা দিই, তাহা হইলে আমাদের শীঘ্রই বিবাহ হইতে পারে। আমি তখন অনেক দূর অগ্রসর হইয়াছি। কাজেই শোভন সিংএর প্রস্তাবে সম্মত হইলাম। বোধ হয় তিনি ভাবিয়াছিলেন, আমি আর অধিক টাকা দিতে স্বীকৃত হইব না। কিন্তু যখন আমি তাহাতেও সম্মত হইলাম, তখন তিনি আন্তরিক বিরক্ত হইলেন। মুখে বলিলেন, সমস্ত টাকা অগ্রিম দিলেই বিবাহ হইবে। আমিও নাছোড় বন্দা, পরদিনই আটশত টাকা আনিয়া শোভন সিংএর হস্তে দিলাম। তিনি আনন্দিত মনে উহা গ্রহণ করিলেন, কিন্তু কোন রসিদ দিলেন না, আমিও চক্ষু লজ্জায় পড়িয়া কোন রসিদ চাহিলাম না তবে যখন টাকা দিই, সেই সময়ে সেখানে তিন চারিজন লোক ছিলেন। তাঁহারাই সাক্ষী স্বরূপ ছিলেন। সে যাহা হউক, টাকা পাইয়া শোভন সিং আবার বিবাহের দিন স্থির করিলেন। আজই সেই দিন। বেলা পাঁচটার সময় আমি কয়েকজন মাত্র বরযাত্র লইয়া কন্যার গৃহে উপস্থিত হইলাম। বাড়ীতে প্রবেশ করিবামাত্র একটা ভয়ানক গোলযোগ আমার কর্ণগোচর হইল। ক্রমে চীৎকার, ক্রন্দনধ্বনিও শুনিতে পাইলাম। মনে একটা কেমন আতঙ্ক উপস্থিত হইল। আমার সঙ্গীগণ দেখিয়া শুনিয়া অবাক হইলেন। বর বা বরযাত্র বসিবার স্থান পর্য্যন্ত করা হয় নাই। কি করিব,
পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।