কোথায় বসিব ভাবিতেছি, এমন সময়ে শোভন সিং কাঁদিতে কাঁদিতে আমাদের নিকটে আসিলেন। বলিলেন, রূপসীকে কে খুন করিয়াছে। ক্রন্দনের শব্দ শুনিয়া গ্রতিবেশিগণ ছুটিয়া আসিল, বাড়ীতে লোকে লোকারণ্য হইল। রূপসীর মৃত্যু-সংবাদে দুঃখ হওয়া দুরে থাক, আমার অত্যন্ত ক্রোধ হইল। আমি অতি কর্কশ স্বরে বলিলাম, “চলুন—আমি মৃতদেহ দেখিতে চাই। কেমন করিয়া কেই বা রূপসীকে খুন করিল, আপনিই বা এখনও থানায় এ সংবাদ দেন নাই কেন? আমি বড় ভাল বুঝিতেছি না। ইহার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনরূপ ষড়যন্ত্র আছে। রূপসী যদি সত্য সত্যই খুন হইয়া থাকে, তাহা হইলে আমি আপনাকে সহজে ছাড়িব না। এই দণ্ডে আমার আটশত টাকা চাই।”
আমার কথায় শোভন সিং কাতর হইলেন। বলিলেন, “আমার কন্যার মৃতদেহ পর্য্যন্ত পাইতেছি না। অগ্রে তাহার সন্ধান না করিয়া কেমন করিয়া থানায় সংবাদ দিব। যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আপনি এখনই সংবাদ দিতে পারেন। আমি একা কোন্ দিক দেখিব”?
“কথা শুনিয়া আমার সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পাইল। আমি তখনই সেখান হইতে বিদায় লইলাম এবং তৎক্ষণাৎ বরবেশ ত্যাগ করিয়া আপনার নিকট উপস্থিত হইয়াছি। এখন আপনিই আমার একমাত্র ভরসা। রূপসীকে পাই ভালই, নচেৎ আমার আটশত টকা ফিরাইয়া চাই। আপনাকে এ টাকা আদায় করিয়া দিতে হইবে।”
আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “আপনার নিবাস কোথায়? নামই বা কি?”