পাতা:খৃষ্ট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানবসম্বন্ধের দেবতা

পেলে অমনি মানুষের মন বললে ‘সত্যকে দেখেছি।’ যতক্ষণ এই ঘটনাগুলি আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন ততক্ষণ আমাদের কাছে তারা নিরর্থক। তাই বৈজ্ঞানিক বলেন, তথ্যগুলি বহু, কিন্তু তারা সত্য হয়েছে অবিচ্ছিন্ন ঐক্যে।

 এই তো গেল বস্তুরাজ্যের নিয়মক্ষেত্র, কিন্তু অধ্যাত্মরাজ্যের আনন্দক্ষেত্রে কি এই ঐক্যতত্ত্বের কোনো স্থান নেই?

 আমরা আনন্দ পাই বন্ধুতে, সন্তানে, প্রকৃতির সৌন্দর্যে। এগুলি ঘটনার দিক থেকে বহু, কিন্তু কোনো অসীম সত্যে কি এদের চরম ঐক্য নেই? এ প্রশ্নের উত্তর বৈজ্ঞানিক দেন না, দেন সাধক। তিনি বলেন, ‘বেদাহমেতম্, আমি যে এঁকে দেখেছি, রসো বৈ সঃ, তিনি যে রসের স্বরূপ —তিনি যে পরিপূর্ণ আনন্দ।’ নিয়মের বিধাতাকে তত পদে পদেই দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু ঋষি যাঁকে বলছেন ‘স নো বন্ধুর্জনিতা’, কে সেই বন্ধু, কে সেই পিতা? যিনি সত্যদ্রষ্টা তিনি ‘হৃদা মনীষা মনসা’ সকল বন্ধুর ভিতর দিয়ে সেই এক বন্ধুকে, সকল পিতার মধ্য দিয়ে সেই এক পিতাকে দেখছেন। বৈজ্ঞানিকের উত্তরে প্রশ্নের যেটুকু বাকি থাকে তার উত্তর তিনিই দেন। তখন আত্মা বলে, ‘আমার জগৎকে পেলুম, আমি বাঁচলুম। আমাদের অন্তরাত্মার এই প্রশ্নের উত্তর যাঁরা দিয়েছেন তাদেরই মধ্যে একজনের নাম যিশুখৃষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘আমি পুত্র, পুত্রের মধ্যেই পিতার আবির্ভাব।’ পুত্রের সঙ্গে পিতার শুধু কার্যকারণের যোগ নয়,

৩৫