বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শোনা কথা

আলাপ বিবৃত করছি। প্রথম ভদ্রলোকটি—যিনি আমাকে ডেকে নিলেন—শ্যামবর্ণ, রোগা, মাথায় টাক, গোঁফ-কামানো, বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি, চোখে পুর‍ু কাচের চশমা, হাতে খবরের কাগজ। একে দেখলেই মনে হয় মাষ্টার মশায়। দ্বিতীয় ভদ্রলোকটিকে বহুকাল থেকে আমাদের পাড়ায় দেখে আসছি। এঁর বয়স এখন প্রায় পঁয়ষট্টি, ফরসা রং, স্থূলকায়, একটু বেশী বেঁটে। পনর বৎসর আগে এঁর কালো গোঁফ দেখেছি, তার পর পাকতে আরম্ভ করতেই বার্ধক্যের লক্ষণ ঢাকবার জন্য কামিয়ে ফেলেন। সম্প্রতি এঁর চুল প্রায় সাদা হয়ে গেছে, কিন্তু চামড়া খুব উর্বর, টাক পড়ে নি। এই সহযোগে ইনি এখন আবক্ষ দাড়ি-গোঁফ এবং আকণ্ঠ বাবরি চুল উৎপাদন করেছেন, তাতে চেহারাটি বেশ ঋষি, ঋষি দেখাচ্ছে। বোধ হয় ইনি যোগশাস্ত্র, থিয়সফি, ফলিত জ্যোতিষ, ইলেকট্রোহোমিওপ্যাধি প্রভৃতি গূঢ় তত্ত্বের চর্চা করেন। এঁকে ভরদ্বাজবাবু বলব। তৃতীয় ভদ্রলোকটি দোহারা, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, বয়স প্রায় ষাট, কাঁচা-পাকা কাইজারী গোঁফ, চেহারা সম্ভ্রান্ত রকমের, পরনে ইজের ও হাতকাটা কামিজ, মুখে একটি বড় চুর‍ুট। সর্বদাই ভ্র‍ূ একটু কুঁচকে আছেন, যেন কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। ইনি নিশ্চয় একজন উঁচু দরের রাজকর্মচারী ছিলেন। এঁকে বাবু বললে হয়তো ছোট করা হবে, অতএব চৌধুরী সায়েব বলব। চতুর্থ লোকটির বয়স আন্দাজ পঁয়তাল্লিশ, লম্বা মজবুত গড়ন,

৭৭