পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8&o * গল্পগুচ্ছ লাগিল। ভূপতি যখন নিদ্রিত থাকিত চার তখন ধীরে ধীয়ে তাহার পায়ের কাছে মাথা রাখিয়া পায়ের ধলা সীমতে তুলিয়া লইত। সেবাশ্যশ্রষায় গহকমে স্বামীর লেশমাত্র ইচ্ছা সে অসম্পণে রাখিত না। আশ্রিত প্রতিপালিত ব্যক্তিদের প্রতি কোনোপ্রকার অযত্নে ভূপতি দঃখিত হইত জানিয়া চার তাহাদের প্রতি আতিথ্যে তিলমাত্র কটি ঘটিতে দিত না। এইরূপে সমস্ত কাজকর্ম সারিয়া ভূপতির উচ্ছিষ্ট প্রসাদ খাইয়া চারর দিন শেষ হইয়া যাইত। এই সেবা যত্নে ভগ্নী ভূপতি যেন নবযৌবন ফিরিয়া পাইল। স্মীর সহিত পবে যেন তাহার নববিবাহ হয় নাই, এতদিন পরে যেন হইল। সাজসজায় হাস্যে পরিহাসে বিকশিত হইয়া সংসারের সমস্ত দভাবনাকে ভূপতি মনের এক পাশে ঠেলিয়া রাখিয়া দিল। রোগ-আরামের পর যেমন ক্ষুধা বাড়িয়া উঠে, শরীরে ভোগশক্তির বিকাশকে সচেতনভাবে অনুভব করা যায়, ভূপতির মনে এতকাল পরে সেইরাপ একটা অপব এবং প্রবল ভাবাবেশের সঞ্চার হইল। বন্ধ দিগকে, এমন-কি, চারকে লুকাইয়া ভূপতি কেবল কবিতা পড়িতে লাগিল। মনে মনে কহিল, কাগজখানা গিয়া এবং অনেক দুঃখ পাইয়া এতদিন পরে আমি আমার স্মীকে আবিষ্কার করিতে •ार्गब्रम्नाष्ट्रि !' ভূপতি চারকে বলিল, “চার, তুমি আজকাল লেখা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছ কেন।” চার বলিল, “ভারি তো আমার লেখা!” ভূপতি। সত্যি কথা বলছি, তোমার মতো অমন বাংলা এখনকার লেখকদের মধ্যে আমি তো আর কারও দেখি নি। বিশ্ববধাতে যা লিখেছিল আমারও ঠিক তাই মত। চার। আঃ, থামো । } - ভূপতি “এই দেখো-না" বলিয়া একখণ্ড সরোরাহ বাহির করিয়া চার ও অমলের ভাষার তুলনা করিতে আরম্ভ করিল। চার আরক্তমখে ভূপতির হাত হইতে কাগজ কাড়িয়া লইয়া অঞ্চলের মধ্যে আচ্ছাদন করিয়া রাখিল । ভূপতি মনে মনে ভবিল, লেখার সঙ্গী একজন না থাকিলে লেখা বাহির হয় না; রোসো, আমাকে লেখাটা অভ্যাস করিতে হইবে, তাহা হইলে ক্লমে চাররও লেখার উৎসাহ সঞ্চার করিতে পারিব।” ভূপতি অত্যন্ত গোপনে খাতা লইয়া লেখা অভ্যাস করিতে আরম্ভ করিল। অভিধান দেখিয়া পনঃপন কাটিয়া, বারবার কপি করিয়া ভূপতির বেকার অবস্থার দিনগুলি কাটিতে লাগিল। এত কন্টে, এত চেষ্টায় তাহাকে লিখিতে হইতেছে যে, সেই বহন্দুখের রচনাগুলির প্রতি ক্ৰমে তাহার বিশ্বাস ও মমতা জন্মিল। " gং অবশেষে একদিন তাহার লেখা আর-একজনকে দিয়া নকল করাইয়া ভূপতি স্মীকে দিল। কহিল, "আমার এক বধ নতুন লিখতে আরম্ভ করেছে। আমি তো কৰি নে, তুমি একবার পড়ে দেখো দেখি তোমার কেমন লাগে।” খাতাখানা চারীর হাতে দিয়া সাধনসে ভূপতি বাহিরে চলিয়া গেল। সরল ভূপতির এই ছলনাটকু চারর বৰিতে বাকি রহিল না। . . পড়িল; লেখার ছাঁদ এবং বিষয় দেখিয়া একটুখানি হাসিল। হায়! চার তাহার স্বামীকে ভক্তি করিবার জন্য এত আয়োজন করিতেছে, সে কেন এমন ছেলেমানষি করিয়া পজায় অধ্য ছড়াইয়া ফেলিতেছে। চারার কাছে বাহবা আদায় করিবার জন্য