পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্টনীড় 3為豊 আজ একবার তার খবর নিয়ে আসতে পার ?" ভূপতি। কেন। কোনো অসুখ করেছে নাকি । চার । না, অসুখ না, জানই তো তুমি গেলে তারা কত খুশি হয়। ভূপতি চারীর অনুরোধে গাড়ি চড়িয়া হাবড়া-স্টেশন-অভিমুখে ছটিল। পথে এক সার গোরুর গাড়ি আসিয়া তাহার গাড়ি আটক করিল। এমন সময় পরিচিত টেলিগ্রাফের হরকরা ভূপতিকে দেখিয়া তাহার হাতে একখানা টেলিগ্রাফ লইয়া দিল। বিলাতের টেলিগ্রাম দেখিয়া ভূপতি ভারি ভয় পাইল। ভাবিল, অমলের হয়তো অসুখ করিয়াছে। ভয়ে ভয়ে খলিয়া দেখিল টেলিগ্রামে লেখা আছে, "আমি ভালো আছি ।" ইহার অর্থ কী। পরীক্ষা করিয়া দেখিল, ইহা প্রী-পেড় টেলিগ্রামের উত্তর । হাওড়া যাওয়া হইল না। গাড়ি ফিরাইয়া ভূপতি বাড়ি আসিয়া সন্ত্রীর হাতে টেলিগ্রাম দিল। ভূপতির হাতে টেলিগ্রাম দেখিয়া চারীর মুখ পাংশ বর্ণ হইয়া গেল । ভূপতি কহিল, “আমি এর মানে কিছই বুঝতে পারছি নে।" অনুসন্ধানে ভূপতি মানে বুঝিল। চার নিজের গহনা বন্ধক রাখিয়া টাকা ধার করিয়া টেলিগ্রাফ পাঠাইয়াছিল। ভূপতি ভাবিল, এত করিবার তো দরকার ছিল না। আমাকে একটা অনুরোধ করিয়া ধরিলেই তো আমি টেলিগ্রাফ করিয়া দিতাম, চাকরকে দিয়া গোপনে বাজারে গহনা বন্ধক দিতে পাঠানো- এ তো ভালো হয় নাই । থাকিয়া থাকিয়া ভূপতির মনে কেবলই এই প্রশন হইতে লাগিল, চার কেন এত বাড়াবাড়ি করিল। একটা অস্পষ্ট সন্দেহ অলক্ষ্যভাবে তাহাকে বিদ্ধ করিতে লাগিল । সে সন্দেহটাকে ভূপতি প্রত্যক্ষভাবে দেখিতে চাহিল না, ভুলিয়া থাকিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু বেদনা কোনোমতে ছাড়িল না। উনবিংশ পরিচ্ছেদ অমলের শরীর ভালো আছে, তব সে চিঠি লেখে না! একেবারে এমন নিদারণ ছাড়াছাড়ি হইল কী করিয়া। একবার মুখোমুখি এই প্রশনটার জবাব লইয়া আসিতে ইচ্ছা হয়, কিন্তু মধ্যে সমদ্ৰ— পার হইবার কোনো পথ নাই। নিষ্ঠর বিচ্ছেদ, নিরপোয় বিচ্ছেদ, সকল প্রশন সকল প্রতিকারের অতীত বিচ্ছেদ । চার্য আপনাকে আর খাড়া রাখিতে পারে না। কাজকম পড়িয়া থাকে, সকল বিষয়েই ভুল হয়, চাকরবাকর চুরি করে; লোকে তাহার দীনভাব লক্ষ্য করিয়া নানাপ্রকার কানাকানি করিতে থাকে, কিছুতেই তার চেতনামার নাই। এমনি হইল, হঠাৎ চার চমকিয়া উঠিত, কথা কহিতে কহিতে তাহাকে কাঁদবার জন্য উঠিয়া যাইতে হইত, অমলের নাম শনিবামাত্র তাহার মুখ বিবণ হইয়া যাইত। অবশেষে ভূপতিও সমস্ত দেখিল, এবং ষাহা মহাতের জন্য ভাবে নাই তাহাe ভাবিল—সংসার একেবারে তাহার কাছে বন্ধ শতক জীণ হইয়া গেল। মাঝে যে কয়দিন আনন্দের উন্মেষে ভূপতি অন্ধ হইয়াছিল সেই কয়দিনের প্রমাতি তাহাকে লন্জা দিতে লাগিল। যে অনভিজ্ঞ বানর জহর চেনে না তাহাকে ৰংটা ৩২