পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাবলিওয়ালা ఫిలిd মেওয়াওয়ালা আর আমি যে একজন বাঙালি সম্প্রান্তবংশীয়, তাহা ভুলিয়া গেলাম— তখন বঝিতে পারিলাম সেও যে আমিও সে, সেও পিতা আমিও পিতা। তাহার পবতগহবাসিনী ক্ষম পাবতীর সেই হস্তচিহ্ন আমারই মিনিকে স্মরণ করাইয়া দিল। আমি তৎক্ষণাৎ তাহাকে অন্তঃপর হইতে ডাকাইয়া পঠাইলাম। অতঃপরে ইহাতে অনেক আপত্তি উঠিয়াছিল। কিন্তু, আমি কিছতে কৰ্ণপাত করিলাম না। রাঙাচেলিপরা কপালে-চন্দন-অাঁকা বধ বেশিনী মিনি সলজভাবে আমার কাছে আসিয়া দাঁড়াইল । তাহাকে দেখিয়া কাবলিওয়ালা প্রথমটা থতমত খাইয়া গেল, তাহাদের পরাতন আলাপ জমাইতে পারিল না। অবশেষে হাসিয়া কহিল, “খোঁখাঁ, তোমি সসরেবাড়ি যাবিস ?” মিনি এখন শ্বশুরবাড়ির অর্থ বোঝে, এখন আর সে পবের মতো উত্তর দিতে পাবিল না— রহমতের প্রশন শুনিয়া লক্ষজায় আরক্ত হইয়া মুখ ফিরাইয়া দাঁড়াইল । কাবলিওয়ালার সহিত মিনির যে দিন প্রথম সাক্ষাৎ হইয়াছিল, আমার সেই দিনের কথা মনে পড়িল । মনটা কেমন ব্যথিত হইয়া উঠিল । মিনি চলিয়া গেলে একটা গভীর দীর্ঘনিশ্ববাস ফেলিয়া রহমত মাটিতে বসিয়া পড়িল। সে হঠাৎ পস্ট বকিতে পারিল, তাহার মেয়েটিও ইতিমধ্যে এইরুপ বড়ো মতো তেমনটি আর পাইলে না। এ আট বৎসরে তাহার কী হইয়াছে তাই বা কে জানে। কলিকাতার এক গলির ভিতরে বসিয়া আফগানিস্থানের এক মর্যপবতের দশ্য দেখিতে লাগিল । আমি একখানি নোট লইয়া তাহাকে দিলাম। বলিলাম, “রহমত, তুমি দেশে তোমার মেয়ের কাছে ফিরিয়া যাও ; তোমাদের মিলনসখে আমার মিনির কল্যাণ হউক।” এই টাকাটা দান করিয়া হিসাব হইতে উংসব-সমারোহের দটো-একটা অঙ্গ ছটিষা দিতে হইল। যেমন মনে করিয়াছিলাম তেমন করিয়া ইলেকট্রিক আলো ক্তৰালাইতে পারিলাম না, গড়ের বাদ্যও আসিল না, অন্তঃপরে মেয়েরা অত্যন্ত উজ্জবল হইয়া উঠিল । অগ্রহায়ণ ১২১১