পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సిమbf গল্পগুচ্ছ দটি চক্ষর মধ্যে চাহিয়া দেখিল এবং অত্যন্ত ধীরে ধীরে মষ্টি শিথিল করিয়া যেন যথাকতব্য অসম্পন্ন রাখিয়া বন্দিনীকে ছাড়িয়া দিল। অপব যদি রাগ করিয়া মন্ময়ীকে ধরিয়া মারিত তাহা হইলে সে কিছই আশ্চৰ্য হইত না, কিন্তু নিজন পথের মধ্যে এই অপরাপ নীরব শাস্তির সে কোনো অর্থ বঝিতে পারিল না। নত্যময়ী প্রকৃতির ন্যপারনিক্কণের ন্যায় চঞ্চল হাস্যধৰনিটি সমস্ত আকাশ ব্যাপিয়া বাজিতে লাগিল এবং চিন্তানিমগ্ন অপবীকৃষ্ণ অত্যন্ত ধীরপদক্ষেপে বাড়িতে আসিয়া উপসি্থত হইল। তৃতীয় পরিচ্ছেদ অপব সমস্ত দিন নানা ছতা করিয়া অন্তঃপরে মার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গেল না। বাহিরে নিমন্ত্রণ ছিল, খাইয়া আসিল। অপবর মতো এমন একজন কৃতবিদ্য গভীর ভাবক লোক একটি সামান্য অশিক্ষিতা বালিকার কাছে আপনার লতে গৌরব উধার করিবার, আপনার আন্তরিক মাহাত্ম্যের পরিপণ পরিচয় দিবার জন্য কেন যে এতটা বেশি উৎকণ্ঠিত হইয়া উঠিবে তাহা বুঝা কঠিন। একটি পাড়াগাঁয়ের চঞ্চল মেয়ে তাঁহাকে সামান্য লোক মনে করিলই বা । সে যদি মহন্তকালের জন্য তাঁহাকে হাস্যাপদ করিয়া তার পর তাঁহার অস্তিত্ব বিস্মত হইয়া রাখাল-নামক একটি নিবোধ নিরক্ষর বালকের সহিত খেলা করিবার জন্য ব্যগ্রতা প্রকাশ করে, তাহাতেই বা তাঁহার ক্ষতি কী। তাহার কাছে প্রমাণ করিবার আবশ্যক কণী যে, তিনি বিশ্ববদীপ-নামক মাসিক পত্রে গ্রন্থসমালোচনা করিয়া থাকেন, এবং তাঁহার তোরsেগর মধ্যে এসেন্স, জন্তা রবিনির ক্যাম্পফর, রঙিন চিঠির কাগজ এবং "হারমোনিয়ন-শিক্ষা বহির সঙ্গে একখানি পরিপাণ খাতা নিশীথের গভে ভাবী উষার নায় প্রকাশের প্রতীক্ষায় রহিয়াছে। কিন্তু, মনকে বুঝানো কঠিন এবং এই পল্লিবাসিনী চঞ্চলা মেয়েটির কাছে শ্ৰীযক্ত অপবীকৃষ্ণ রায়, বি. এ. কিছুতেই পরাভব স্বীকার করিতে প্রস্তুত নহে। সন্ধ্যার সময়ে অন্তঃপরে প্রবেশ করিলে মা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন রে অপর, মেয়ে কেমন দেখলি । পছন্দ হয় তো ?” অপবর্গ কিঞ্চিৎ অপ্রতিভভাবে কহিল, “মেয়ে দেখেছি মা, ওর মধ্যে একটিকে আমার পছন্দ হয়েছে।” মা আশ্চর্য হইয়া কহিলেন, “তুই আবার কটি মেয়ে দেখলি " অবশেষে অনেক ইতস্ততর পর প্রকাশ পাইল, প্রতিবেশিনী শরতের মেয়ে মন্ময়ীকে তাঁহার ছেলে পছন্দ করিয়াছে। এত লেখাপড়া শিখিয়া এমনি ছেলের प्रिक्लङग्न ! প্রথমে অপবর পক্ষে অনেকটা পরিমাণ লক্ষজা ছিল, অবশেষে মা যখন প্রবল আপত্তি করিতে লাগিলেন তখন তাহার লন্জা ভাঙিয়া গেল। সে রোখের মাথায় বলিয়া বসিল, মন্ময়ীকে ছাড়া আর-কাহাকেও বিবাহ করিব না। অন্য জড়পত্তেলি মেয়েটিকে সে যতই কল্পনা করিতে লাগিল ততই বিবাহ-সম্বন্ধে তাহার বিষম বিতৃষ্ণার উদ্রেক হইল । দুই-তিন দিন উভয়পক্ষে মান-অভিমান, অনাহার-অনিদ্রার পর অপবই জয়ী