পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨OO গল্পগুচ্ছ “দেখো বাছা, তুমি কিছ আর কচি থাকি নও, আমাদের ঘরে অমন বেহায়াপনা করিলে চলিবে না।” শাশুড়ি যে ভাবে বলিলেন মন্ময়ী সে ভাবে কথাটা গ্রহণ করিল না। সে ভাবিল, এ ঘরে যদি না চলে তবে বঝি অন্যত্র যাইতে হইবে। অপরাহ্লে তাহাকে আর দেখা গেল না। কোথায় গেল, কোথায় গেল, খোঁজ পড়িল। অবশেষে বিশ্ববাসঘাতক রাখাল তাহাকে তাহার গোপন সথান হইতে ধরাইয়া দিল। সে বটতলায় রাধাকান্ত ঠাকুরের পরিত্যক্ত ভাঙা রথের মধ্যে গিয়া বসিয়া ছিল। শাশুড়ি মা এবং পাড়ার সমস্ত হিতৈষিণীগণ মন্ময়ীকে যেরপে লাঞ্ছনা করিল তাহা পাঠকগণ এবং পাঠিকাগণ সহজেই কল্পনা করিতে পারিবেন। রাত্রে ঘন মেঘ করিয়া ঝাপ ঝাপ শব্দে ব্যষ্টি হইতে আরম্ভ হইল। অপবীকৃষ্ণ বিছানার মধ্যে অতি ধীরে ধীরে মন্ময়ীর কাছে ঈষৎ অগ্রসর হইয়া তাহার কানে কানে মন্দবেরে কহিল, “মন্ময়ী, তুমি আমাকে ভালোবাস না ?” মন্ময়ী সতেজে বলিয়া উঠিল, “না। আমি তোমাকে ককখনোই ভালোবাসব না।” তাহার যত রাগ এবং যত শাসিতবিধান সমস্তই পঞ্জীভূত বজ্রের ন্যায় অপবর মাথার উপর নিক্ষেপ করিল। অপব ক্ষম হইয়া কহিল, “কেন, আমি তোমার কাছে কী দোষ করেছি।" এ অপরাধের সন্তোষজনক কৈফিয়ত দেওয়া কঠিন। কিন্তু, অপব মনে মনে কহিল, যেমন করিয়া হউক এই দবাধ্য মনটিকে বশ করিতে হইবে। পরদিন শাশুড়ি মন্ময়ীর বিদ্রোহী ভাবের সমস্ত লক্ষণ দেখিয়া তাহাকে ঘরে দরজা বন্ধ করিয়া রাখিয়া দিল। সে নতন পিঞ্জরাবন্ধ পাখির মতো প্রথম অনেকক্ষণ ঘরের মধ্যে ধড় ফড় করিয়া বেড়াইতে লাগিল। অবশেষে কোথাও পালাইবার কোনো পথ না দেখিয়া নিৰ্ম্মফল ক্ৰোধে বিছানার চাদরখানা দাঁত দিয়া ছিাড়িয়া কুটিকুটি করিয়া ফেলিল, এবং মাটির উপর উপড়ে হইয়া পড়িয়া মনে মনে বাবাকে ডাকিতে ডাকিতে কদিতে লাগিল । এমন সময়ে ধীরে ধীরে কে তাহার পাশে আসিয়া বসিল । সস্নেহে তাহার ধলিলন্ঠিত চুলগুলি কপোলের উপব হইতে তুলিয়া দিবার চেষ্টা করিল। মন্ময়ী সবলে মাথা নাড়িয়া তাহার হাত সরাইয়া দিল। অপব কানের কাছে মুখ নত করিয়া মদসবরে কহিল, “আমি লুকিয়ে দরজা খালে দিয়েছি। এসো আমরা খিড়কির বাগানে পালিয়ে যাই।” মন্ময়ী প্রবলবেগে মাথা নাড়িয়া সতেজে সরোদনে কহিল, “মা ।” অপব তাহার চিবকে ধরিয়া মুখ তুলিয়া দিবার চেষ্টা করিয়া কহিল, “একবার দেখো কে এসেছে।” রাখাল ভূপতিত মন্ময়ীর দিকে চাহিয়া হতবন্ধির ন্যায় বারের কাছে দাঁড়াইয়া ছিল। মন্ময়ী মুখ না তুলিয়া অপবর হাত ঠেলিয়া দিল। অপব কহিল, “রাখাল তোমার সঙ্গে খেলা করতে এসেছে, খেলতে যাবে?” সে বিরক্তিউচ্ছসিত সবরে কহিল, “না।” রাখালও সুবিধা নয় বঝিয়া কোনোমতে ঘর হইতে পালাইয়া হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচল। অপব চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। মন্ময়ী কাঁদতে কাঁদিতে শ্রান্ত হইয়া ঘামাইয়া পড়িল, তখন অপব পা টিপিয়া বাহির হইয়া বারে विकल मिल्ला क्रांठाझा प्राठा ।