পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२७ গল্পগুচ্ছ তখন ক্ষীণদৃষ্টি যাবাপর ষের বঝিতে বাকি রহিল না যে, কোনো-একটি অজ্ঞানকৃত অপরাধের দণ্ডবিধান হইতেছে। তাড়াতাড়ি বাহিরে আসিয়া কহিলেন, “কই, আজ আমাকে জাম দিলে না ?” গিরিবালা সে কথা কানে না আনিয়া বহন অন্বেষণ ও পরীক্ষায় একটি জাম মনোনীত করিয়া অত্যন্ত নিশিচন্তমনে খাইতে আরম্ভ করিল। এই জামগুলি গিরিবালাদের বাগানের জাম এবং যবোপর ষের দৈনিক বরাদ্দ । কী জানি, সে কথা কিছতেই আজ গিরিবালার সমরণ হইল না, তাহার ব্যবহারে প্রকাশ পাইল যে এগুলি সে একমাত্র নিজের জন্যই আহরণ করিয়াছে। কিন্তু নিজের বাগান হইতে ফল পাড়িয়া পরের দরজার সম্মুখে আসিয়া ঘটা করিয়া খাইবার কী অথ পরিকার বঝো গেল না। তখন পর্ষটি কাছে আসিয়া তাহার হাত ধরিল। গিরিবালা প্রথমটা অকিয়া-বাঁকিয়া হাত ছাড়াইয়া চলিয়া যাইবার চেষ্টা করিল, তাহার পরে সহসা আশ্রজেলে ভাসিয়া কাঁদিয়া উঠিল, এবং অচিলের জাম ভূতলে ছড়াইয়া zझर्गजम्ना निग्ना इयूक्लेिम्ना फ़जिग्ना काल । সকালবেলাকার চঞ্চল রৌদ্র এবং চঞ্চল মেঘ বৈকালে শান্ত ও শ্রান্ত ভাব ধারণ করিয়াছে; শত্র সফীত মেঘ আকাশের প্রান্তভাগে সতপোকার হইয়া পড়িয়া আছে এবং অপরাহের অবসন্নপ্রায় আলোক গাছের পাতায়, পঙ্কেরিণীর জলে এবং বর্ষামনাত প্রকৃতির প্রত্যেক অঙ্গে প্রত্যঙ্গে ঝিক'ঝিকা করিতেছে। আবার সেই বালিকাটিকে সেই গরাদের জানলার সম্মুখে দেখা যাইতেছে এবং ঘরের মধ্যে সেই যবে পরষটি বসিয়া আছে। প্রভেদের মধ্যে এবেলা বালিকার অঞ্চলে জাম নাই এবং যুবকের হস্তেও বই নাই। তদপেক্ষা গরতের এবং নিগঢ় প্রভেদও কিছ কিছু ছিল। এবেলাও বালিকা কী বিশেষ আবশ্যকে সেই বিশেষ পথানে আসিয়া ইতস্তত করিতেছে বলা কঠিন। আর যাহাই আবশ্যক থাক, ঘরের ভিতরকার মানুষটির সহিত আলাপ করিবার যে আবশ্যক আছে ইহা কোনোমতেই বালিকার ব্যবহারে প্রকাশ পায় না। বরঞ্চ বোধ হইল সে দেখিতে আসিয়াছে, সকালবেলায় যে জামগলা ফেলিয়া গেছে বিকালবেলায় তাহার কোনোটার অঙ্কুর বাহির হইয়াছে কি না। কিন্তু অঙ্কুর না বাহির হইবার অন্যান্য কারণের মধ্যে একটি গম্ভীরতর কারণ এই ছিল যে, ফলগুলি সম্প্রতি যুবকের সম্মুখের তত্ত্বপোষের উপর রাশীকৃত ছিল: এবং বালিকা যখন ক্ষণে ক্ষণে অবনত হইয়া কোনো একটা অনিদেশ্য কাল্পনিক পদার্থের অনুসন্ধানে নিযন্তে ছিল তখন যবেক মনের হাস্য গোপন করিয়া অত্যন্ত গভীরভাবে একটি একটি জাম নিবাচন করিয়া সযত্নে আহার করিতেছিল। অবশেষে যখন দটো-একটা অটি দৈবক্ৰমে বালিকার পায়ের কাছে, এমন কি পায়ের উপরে আসিয়া পড়িল, তখন গিরিবালা বঝিতে পারিল যবেক বালিকার অভিমানের প্রতিশোধ লইতেছে। কিন্তু এই কি উচিত! যখন সে আপনার ক্ষুদ্র হদয়টুকুর সমস্ত গব বিসজন দিয়া আত্মসমপণ করিবার অবসর খ:জিতেছে তখন কি তাহার সেই অত্যন্ত দরহ পথে বাধা দেওয়া নিষ্ঠুরতা নহে। ধরা দিতে আসিয়াছে, এই কথাটা ধরা পড়িয়া ৰালিকা যখন ক্রমশ আরন্তিম হইয়া পলায়নের পথ অনুসন্ধান করিতে লাগিল তখন যবেক বাহিরে আসিয়া তাহার হাত ধরিল। সকালবেলাকার মতো এবেলাও বালিকা অকিয়া-বাঁকিয়া হাত ছাড়াইয়া পালাইবার