পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्ािनि abf@。 এই অংশটি তাহার পক্ষে সম্পণে অপরিচিত, এই অংশে সন্ত্রীর সহিত তাহার কোনো যোগ নাই। সত্ৰী তাহাকে আপনার এই শিশ্যনেহের ভাগ দিবার অনেক চেষ্টা করিত, কিন্তু ঠিক কৃতকায হইত কি না বলিতে পারি না। শশী নীলমণিকে কোলে করিয়া আনিয়া হাস্যমুখে তাহার স্বামীর সম্মুখে ধরিত—- নীলমণি প্রাণপণে শশীর গলা জড়াইয়া ধরিয়া তাহার কাঁধে মুখ লুকাইত, কোনোপ্রকার কুটবিতার খাতির মানিত না। শশীর ইচ্ছা, তাহার এই ক্ষুদ্র ভ্রাতাটির যতপ্রকার মন ভুলাইবার বিদ্যা আয়ত্ত আছে, সবগুলি জয়গোপালের নিকট প্রকাশ হয় ; কিন্তু জয়গোপালও সেজন্য বিশেষ আগ্রহ অনুভব করিত না এবং শিশুটিও বিশেষ উৎসাহ দেখাইত না। জয়গোপাল কিছতেই বকিতে পারিত না, এই কৃশকায় :হংমস্তক গভীরমুখ শ্যামবণ ছেলেটার মধ্যে এমন কী আছে যেজন্য তাহার প্রতি এতটা স্নেহের অপব্যয় করা হইতেছে । ভালোবাসার ভাবগতিক মেয়েরা খুব চট করিয়া বোঝে। শশী অবিলম্বেই ব্যকিল, জয়গোপাল নীলমণির প্রতি বিশেষ অনরন্ত নহে। তখন ভাইটিকে সে বিশেষ সাবধানে আড়াল করিয়া রাখিত-- স্বামীর স্নেহহীন বিরাগদষ্টি হইতে তাহাকে তফাতে তফাতে রাখিতে চেষ্টা করিত। এইরুপে ছেলেটি তাহার গোপন যত্নের ধন, ৩হার একলার সেনহের সামগ্ৰী হইয়া উঠিল । সকলেই জানেন, স্নেহ যত গোপনের, ধত নিজনের হয় ততই প্রবল হইতে থাকে । নীলমণি কাঁদিলে জয়গোপাল অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিত, এইজন্য শশী তাহাকে ৩াড়াতাড়ি বকের মধ্যে চাপিয়া, সমস্ত প্রাণ দিয়া, বকে দিয়া, তাহার কান্না থামাইবার চষ্টা করিত— বিশেষত, নীলমণির কন্নায় যদি রাত্রে তাহার স্বামীর ঘামের ব্যাঘাত হইত এবং স্বামী এই ক্ৰন্দনপরায়ণ ছেলেটার প্রতি অত্যন্ত হিংস্রভাবে ঘণাপ্রকাশপবেক জজীরচিত্তে গজন করিয়া উঠিত, তখন শশী যেন অপরাধিনীর মতো সংকুচিত শশব্যস্ত হইয়া পড়িত : তৎক্ষণাৎ তাহাকে কোলে করিয়া দরে লইয়া গিয়া একান্ত সাননেয় স্নেহের স্বরে “সোনা আমার, ধন আমার, মানিক আমার” বলিয়া ঘাম পড়াইতে থাকিত । ছেলেতে ছেলেতে নানা উপলক্ষ্যে ঝগড়া বিবাদ হইয়াই থাকে। পবে এরপে স্থলে শশী নিজের ছেলেদের দণ্ড দিয়া ভাইয়ের পক্ষ অবলম্ববন করিত, কারণ, তাহার মা ছিল না। এখন বিচারকের সঙ্গে সঙ্গে দণ্ডবিধির পরিবতন হইল। এখন সবদাই নিরপরাধে এবং অবিচারে নীলমণিকে কঠিন দণ্ড ভোগ করিতে হইত। সেই অন্যায় শশীর বক্ষে শেলের মতো বাজিত : তাই সে দণ্ডিত ভ্রাতাকে ঘরে লইয়া গিয়া মিষ্ট দিযা, খেলেনা দিয়া, আদর করিয়া, চুমো খাইয়া, শিশুর আহত হাদয়ে যথাসাধ্য সালম্বনাবিধান করিবার চেষ্টা করিত। ফলত দেখা গেল, শশী নীলমণিকে যতই ভালোবাসে জয়গোপাল নীলমণির প্রতি ততই বিরক্ত হয়, আবার জয়গোপাল নীলমণির প্রতি যতই বিরাগ প্রকাশ করে শশী তাহাকে ততই স্নেহসন্ধায় অভিষিক্ত করিয়া দিতে থাকে। জয়গোপাল লোকটা কখনও তাহার স্ত্রীর প্রতি কোনোরাপ কঠোর ব্যবহার করে না এবং শশী নীরবে নম্নভাবে প্রীতির সহিত তাহার স্বামীর সেবা করিয়া থাকে ; কেবল এই নীলমণিকে লইয়া ভিতরে ভিতরে উভয়ে উভয়কে অহরহ আঘাত দিতে লাগিল । సిఫి