পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विष्ठिवि। ෆ8S পবে-বাতাস বেগে বহিতে লাগিল, মেঘের পশ্চাতে মেঘ ছটিয়া চলিল, নদীর জল খল খল হস্যে সফীত হইয়া উঠিতে লাগিল—নদীতীরবতী আন্দোলিত বনশ্রেণীর মধ্যে অন্ধকার পঞ্জীভূত হইয়া উঠিল, ভেক ডাকিতে আরম্ভ করিল, ঝিল্লিধর্মনি যেন করাত দিয়া অন্ধকারকে চিরিতে লাগিল। সম্মুখে আজ যেন সমস্ত জগতের রথযাত্রা— চাকা ঘুরিতেছে, ধনজা উড়িতেছে, পথিবী কাঁপতেছে; মেঘ উড়িয়াছে, বাতাস ছটিয়াছে, নদী বহিয়াছে, নৌকা চলিয়াছে, গান উঠিয়াছে; দেখিতে দেখিতে গর গর শব্দে মেঘ ডাকিয়া উঠিল, বিদ্যুৎ আকাশকে কাটিয়া কাটিয়া ঝলসিয়া উঠিল, সদের অন্ধকার হইতে একটা মনুষলধারাবষী বটির গন্ধ আসিতে লাগিল। কেবল নদীর এক তীরে এক পাবে কাঠালিয়া গ্রাম আপন কুটিরম্বার বন্ধ করিয়া দীপ নিবাইয়া দিয়া নিঃশব্দে ঘনমাইতে লাগিল। পরদিন তারাপদর মাতা ও ভ্রাতাগণ কাঠালিয়ায় আসিয়া অবতরণ করিলেন, পরদিন কলিকাতা হইতে বিবিধসামগ্রীপণ তিনখানা বড়ো নৌকা আসিয়া কাঁঠালিয়ার জমিদারি কাছারির ঘাটে লাগিল এবং পরদিন অতি প্রাতে সোনামণি কাগজে কিঞ্চিং আমসত্ত এবং পাতার ঠোঙায় কিঞ্চিৎ আচার লইয়া ভয়ে ভয়ে তারাপদর পাঠগহবারে আসিয়া নিঃশব্দে দাঁড়াইল— কিন্তু পরদিন তারাপদকে দেখা গেল না। স্নেহ-প্রেমবন্ধত্বের ষড়যন্ত্ৰবন্ধন তাহাকে চারি দিক হইতে সম্পণেরপে ঘিরিবার পবেই সমস্ত গ্রামের হদয়খানি চুরি কবিয়া একদা বর্ষার মেঘালধকার রাত্রে এই ব্লাহরণবালক আসক্তিবিহীন উদাসীন জননী বিশ্বপথিবীর নিকট চলিয়া গিয়াছে। ভাদ্র-কাতিক ১৩o২