পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○>切 গল্পগুচ্ছ করিত। সন্ত্রীর কোনো দোষ ছিল না, কোনো ভ্রম ছিল না, তব স্বামীর কোনো সখ ছিল না। সে তাহার সহধর্মিণীর শনাগহবর হদয় লক্ষ্য করিয়া কেবলই হীরামক্তার গহনা ঢালিত কিন্তু সেগলো পড়িত গিয়া লোহার সিন্দকে, হৃদয় শনাই থাকিত। খড়া দগামোহন ভালোবাসা এত সক্ষম করিয়া ব্যঝিত না, এত কাতর হইয়া চাহিত না, এত প্রচুর পরিমাণে দিত না, অথচ খড়ির নিকট হইতে তাহা অজস্র পরিমাণে লাভ করিত। ব্যবসায়ী হইতে গেলে নব্যবাব হইলে চলে না এবং স্বামী হইতে গেলে পর্ষ হওয়া দরকার, এ কথায় সন্দেহমাত্র করিবেন না। ঠিক এই সময়ে শগালগলা নিকটবতী ঝোপের মধ্য হইতে অত্যন্ত উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিয়া উঠিল। মাস্টারমহাশয়ের গলপস্রোতে মিনিটকয়েকের জন্য বাধা পড়িল । ঠিক মনে হইল, সেই অন্ধকার সভাভূমিতে কৌতুকপ্রিয় শগালসম্প্রদায় ইস্কুলমাস্টারের ব্যাখ্যাত দাম্পত্যনীতি শনিয়াই হউক বা নবসভ্যতাদবল ফণিভূষণের আচরণেই হউক, রহিয়া রহিয়া অট্টহাস্য করিয়া উঠিতে লাগিল। তাহাদের ভাবোচ্ছনাস নিবত্তে হইয়া জলস্থল বিগণতর নিস্তব্ধ হইলে পর মাস্টার সন্ধ্যার অন্ধকারে তাঁহার বৃহৎ উজ্জল চক্ষ পাকাইয়া গল্প বলিতে লাগিলেন— ফণিভূষণের জটিল এবং বহুবিস্তৃত ব্যবসায়ে হঠাৎ একটা ফড়িা উপস্থিত হইল। ব্যাপারটা কী তাহা আমার মতো অব্যবসায়ীর পক্ষে বোঝা এবং বোঝানো শক্ত । মোন্দা কথা, সহসা কী কারণে বাজারে তাহার ক্রেডিট রাখা কঠিন হইয়া পড়িয়াছিল। যদি কেবলমাত্র পাঁচটা দিনের জন্যও সে কোথাও হইতে লাথদেড়েক টকা বাহির করিতে পারে, বাজারে একবার বিদ্যতের মতো এই টাকাটার চেহারা দেখাইয়া যায়, তাহা হইলেই মহেতের মধ্যে সংকট উত্তীণ হইয়া তাহার ব্যবসা পালভরে ছটিয়া চলিতে পারে । টাকাটার সুযোগ হইতেছিল না। পথানীয় পরিচিত মহাজনদের নিকট হইতে ধার করিতে প্রবত্ত হইয়াছে এরুপ জনরব উঠিলে তাহার ব্যবসায়ের বিগণ অনিষ্ট হইবে আশঙ্কায় তাহাকে অপরিচিত পথানে ঋণের চেষ্টা দেখিতে হইতেছিল। সেখানে উপযুক্ত বন্ধক না রাখিলে চলে না। গহনা বন্ধক রাখিলে লেখাপড়া এবং বিলম্বের কারণ থাকে না, চটপট এবং সহজেই কাজ হইয়া যায়। ফণিভূষণ একবার সন্ত্রীর কাছে গেল। নিজের সীর কাছে স্বামী যেমন সহজভাবে যাইতে পারে ফণিভূষণের তেমন করিয়া যাইবার ক্ষমতা ছিল না। সে দভাগ্যক্রমে বাসে; যে ভালোবাসায় সন্তপণে পদক্ষেপ করিতে হয় এবং সকল কথা মন্খে ফটিয়া বাহির হইতে পারে না, যে ভালোবাসার প্রবল আকর্ষণ সবে এবং পথিবীর আকর্ষণের ন্যায় মাঝখানে একটা অতিদার ব্যবধান রাখিয়া দেয়। তথাপি তেমন তেমন দায়ে পড়িলে কাব্যের নায়ককেও প্রেয়সীর নিকট হল্ডি এবং বন্ধক এবং হ্যান্ডনেটের প্রসঙ্গ তুলিতে হয়; কিন্তু সরে বাধিয়া যায়, বাকাখলন হয়, এমন-সকল পরিকার কাজের কথার মধ্যেও ভাবের জড়িমা ও বেদনার বেপথ