পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪২৬ গল্পগুচ্ছ আরম্ভ করিলেন। গানবাজনা আর চলে না। রাজা মধ্যাহ্নে জমিদারি-কাজ দেখিতেন। একদিন সকাল-সকাল অন্তঃপরে গিয়া দেখিলেন, রানী কী-একটা পড়িতেছেন। রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, “ও কী পড়িতেছ।” রানী প্রথমটা একটা অপ্রতিভ হইয়া কহিলেন, "বিপিনবাবরে একটা গানের খাতা আনাইয়া দটো-একটা গানের কথা মুখস্থ করিয়া লইতেছি; হঠাৎ তোমার শখ মিটিয়া গিয়া আর তো গান শনিবার জো নাই!” বহুপবে শখটাকে সমলে বিনাশ করিবার জন্য রানী যে বহুবিধ চেষ্টা করিয়াছিলেন, সে কথা কেহ তাঁহাকে স্মরণ করাইয়া क्रिव्ण ना । পরদিন বিপিনকে রাজা বিদায় করিয়া দিলেন; কাল হইতে কী করিয়া কোথায় তাঁহার অন্নমষ্টি জটিবে সে সম্বন্ধে কোনো বিবেচনা করিলেন না। দঃখ কেবল তাহাই নহে, ইতিমধ্যে বিপিন রাজার সহিত অকৃত্রিম অনরোগে আবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছিলেন; বেতনের চেয়ে রাজার প্রণয়টা তাঁহার কাছে অনেক বেশি দামি হইয়া উঠিয়াছিল। কিন্তু, কী অপরাধে যে হঠাৎ রাজার হাদ্যতা হারাইলেন, অনেক ভাবিয়াও বিপিন তাহা ঠিক করিতে পারিলেন না। এবং দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া তাঁহার পরাতন তবরোটিতে গেলাপ পরাইয়া বন্ধহীন বহৎ সংসারে বাহির হইয়া পড়িলেন ; যাইবার সময় রাজভৃত্য পটেকে তাঁহার শেষ সম্ভবল দইটি টাকা পরস্কার দিয়া গেলেন। আষাঢ় ১৩০৭