পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8@良 গল্পগুচ্ছ চোখের দুই-চার ফোঁটা জল মিশাইয়া তাহাকে সম্পণে হার মানাইয়াছে। এখন বিধবার অভিভাবক পিসে কিছু টাকা চায়। আমি বলিলাম, “এখনই লও।” নবীন বলিল, “তাহা ছাড়া বিবাহের পর প্রথম মাস পাঁচ-ছয় বাবা নিশ্চয় আমার মাসহারা বন্ধ করিয়া দিবেন, তখনকার মতো উভয়ের খরচ চালাইবার জোগাড় করিয়া দিতে হইবে।” আমি কথাটি না কহিয়া চেক লিখিয়া দিলাম। বলিলাম, “এখন তাঁহার নামটি বলো। আমার সঙ্গে যখন কোনো প্রতিযোগিতা নাই তখন পরিচয় দিতে ভয় করিয়ো না। তোমার গা ছুইয়া শপথ করিতেছি, আমি তাঁহার নামে কবিতা লিখিব না, এবং যদি লিখি তাঁহার ভাইকে না পাঠাইয়া তোমার কাছে পাঠাইয়া দিব ।” নবীন কহিল, “আরে, সেজন্য আমি ভয় করি না। বিধবাবিবাহের লঙ্গায় তিনি অত্যন্ত কাতর, তাই তোমাদের কাছে তাঁহার সম্বন্ধে আলোচনা করিতে তিনি অনেক করিয়া নিষেধ করিয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু এখন আর ঢাকিযা রাখা মিথ্যা। তিনি তোমারই প্রতিবেশিনী, ১৯ নম্বরে থাকেন।” হৎপিণ্ডটা যদি লোহার বয়লার হইত তো এক চমকে ধক করিয়া ফাটিয়া বাইত। জিজ্ঞাসা করিলাম, “বিধবাবিবাহে তাঁহার অমত নাই ?” নবীন হাসিয়া কহিল, “সম্প্রতি তো নাই।” আমি কহিলাম, “কেবল কবিতা পড়িয়াই তিনি মগধ ?” নবীন কহিল, “কেন, আমার সেই কবিতাগলি তো মন্দ হয় নাই।” ধিক কাহাকে। তাঁহাকে, না আমাকে, না বিধাতাকে ? কিন্তু ধিক।