পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3げ0 গল্পগুচ্ছ এসেছে।–চারার মাখ লাল হইয়া উঠিল। ভূপতি। তা হলে কি ছটে তোমাকে খবর দিতে আসতুম। বকশিশ পাবার তো আশা ছিল না। চার। অমলের সম্বন্ধ এসেছে ? বেশ তো। তা হলে আর দেরি কেন। ভূপতি। বর্ধমানের উকিল রঘুনাথবাব তাঁর মেয়ের সঙ্গে বিবাহ দিয়ে অমলকে বিলেত পাঠাতে চান। চার বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, "বিলেত ?” ভূপতি। হাঁ, বিলেত। চার। অমল বিলেত যাবে ? বেশ মজা তো। বেশ হয়েছে, ভালোই হয়েছে। তা তুমি তাকে একবার বলে দেখো। ভূপতি। আমি বলবার আগে তুমি তাকে একবার ডেকে বুঝিয়ে বললে ভালো হয় না ? চার । আমি তো তিন হাজার বার বলেছি। সে আমার কথা রাখে না। আমি তাকে বলতে পারব না । ভূপতি। তোমার কি মনে হয়, সে করবে না ? চার। আরও তো অনেকবার চেষ্টা দেখা গেছে, কোনোমতে তো রাজি হয় নি। ভূপতি। কিন্তু এবারকার এ প্রস্তাবটা তার পক্ষে ছাড়া উচিত হবে না। আমার অনেক দেনা হয়ে গেছে, অমলকে আমি তো আর সেরকম করে আশ্রয় দিতে পারব না। ভূপতি অমলকে ডাকিয়া পাঠাইল। অমল আসিলে তাহাকে বলিল, “বধমানের উকিল রঘুনাথবাবর মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। তাঁর ইচ্ছে, বিবাহ দিয়ে তোমাকে বিলেত পাঠিয়ে দেবেন । তোমার কী মত ।” অমল কহিল, “তোমার যদি অনুমতি থাকে, আমার এতে কোনো অমত নেই।" অমলের কথা শুনিয়া উভয়ে আশ্চর্ষ হইয়া গেল। সে যে বলিবামাত্রই রাজি হইবে, এ কেহ মনে করে নাই । চার তীব্রস্বরে ঠাট্টা করিয়া কহিল, "দাদার অনুমতি থাকিলেই উনি মত দেবেন। কণী আমার কথার বাধ্য ছোটো ভাই ! দাদার পরে ভক্তি এতদিন কোথায় ছিল, ঠাকুরপো।” অমল উত্তর না দিয়া একটুখানি হাসিবার চেষ্টা করিল। অমলের নিরক্তরে চার যেন তাহকে চেতাইযা তুলিবার জন্য লিগণতর কাজের সঙ্গে বলিল, “তার চেয়ে বলো-না কেন, নিজেব ইচ্ছে গেছে। এতদিন ভান করে থাকবার কী দরকার ছিল যে বিয়ে করতে চাও না। পেটে খিদে মখে লাজ !" ভূপতি উপহাস করিয়া কহিল, “অমল তোমার খাতিরেই এতদিন খিদে চাপ রেখেছিল, পাছে ভাজের কথা শুনে তোমার হিংসে হয়।” চার এই কথায় লাল হইয়া উঠিয়া কোলাহল করিয়া বলিতে লাগিল, “হিংসে' তা বইকি! কখখনো আমার হিংসে হয় না। ওরকম করে বলা তোমার ভারি অন্যায় " ভূপতি। ঐ দেখো । নিজের স্মীকে ঠাটাও করতে পারব না। চার । না, ওরকম ঠাট্টা আমার ভালো লাগে না। ভূপতি। আচ্ছা, গরতর অপরাধ করেছি। মাপ করো। যা হোক, বিয়ের প্রস্তাব