পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नन्छेनौछ 8げ& তামাক পড়িয়া শ্ৰান্ত ভূপতির ঘমে আসিতে লাগিল। ক্ষণে ক্ষণে ঘামের ঘোর ভাঙিয়া চমকিয়া জাগিয়া উঠিয়া সে ভাবিতে লাগিল, এখনও চার আসিতেছে না কেন। অবশেষে ভূপতি থাকিতে না পারিয়া চারকে ডাকিয়া পাঠাইল। ভূপতি জিজ্ঞাসা করিল, “চার, আজ যে এত দেরি করলে ?” চার তাহার জবাবদিহি না করিয়া কহিল, “হা, আজ দেরি হয়ে গেল।” চারীর আগ্রহপণ প্রশ্নের জন্য ভূপতি অপেক্ষা করিয়া রহিল; চার কোনো প্রশ্ন করিল না। ইহাতে ভূপতি কিছু ক্ষয় হইল। তবে কি চার অমলকে ভালোবাসে না। অমল যতদিন উপস্থিত ছিল ততদিন চার তাহাকে লইয়া আমোদ আহমাদ করিল, আর যেই চলিয়া গেল অমনি তাহার সম্বন্ধে উদাসীন। এইরুপ বিসদৃশ ব্যবহারে ভূপতির মনে খটকা লাগিল; সে ভাবিতে লাগিল, তবে কী চারীর হৃদয়ের গভীরতা নাই। কেবল সে আমোদ করিতেই জানে, ভালোবাসিতে পারে না ? মেয়েমানুষের পক্ষে এরুপ নিরাসক্ত ভাব তো ভালো নয় । চার ও অমলের সখিত্বে ভূপতি আনন্দ বোধ করিত । এই দুইজনের ছেলেমানষি আড়ি ও ভাব, খেলা ও মন্ত্রণা তাহার কাছে সমিষ্ট কৌতুকাবহ ছিল; অমলকে চার সবাদা যে যত্ন-আদর করিত তাহাতে চারর, সকোমল হদয়ালতার পরিচয় পাইয়া ভূপতি মনে-মনে খুশি হইত। আজ আশ্চর্য হইয়া ভাবিতে লাগিল, সে সমস্তই কি ভাসা-ভাসা, হৃদয়ের মধ্যে তাহার কোনো ভিত্তি ছিল না ? ভূপতি ভাবিল, চারীর হৃদয় যদি না থাকে তবে কোথায় ভূপতি আশ্রয় পাইবে। অম্পে অপে পরীক্ষা করিবার জন্য ভূপতি কথা পাড়িল, “চারন, তুমি ভালো ছিলে তো ? তোমার শরীর খারাপ নেই ?” চার সংক্ষেপে উত্তর করিল, “ভালোই আছি।” ভূপতি। অমলের তো বিয়ে চুকে গেল। এই বলিয়া ভূপতি চুপ করিল। চার তৎকালোচিত একটা-কোনো সংগত কথা বলিতে অনেক চেষ্টা করিল, কোনো কথাই বাহির হইল না; সে আড়ষ্ট হইয়া রহিল। ভূপতি স্বভাবতই কখনও কিছু লক্ষ্য করিয়া দেখে না, কিন্তু অমলের বিদায়শোক তাহার নিজের মনে লাগিয়া আছে বলিয়াই চারর ঔদাসীন্য তাহাকে আঘাত করিল। তাহার ইচ্ছা ছিল, সমবেদনায় ব্যথিত চারীর সঙ্গে অমলের কথা আলোচনা করিয়া সে হৃদয়ভার লাঘব করিবে । ভূপতি। মেয়েটিকে দেখতে বেশ — চার ঘমোচ্ছ ? "וזה" הסfa# :3ה5 ভূপতি। বেচারা অমল একলা চলে গেল। যখন তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিলাম, সে ছেলেমানষের মতো কাঁদতে লাগল— দেখে এই বড়োবয়সে আমি আর চোখের জল রাখতে পারলাম না। গাড়িতে দুজন সাহেব ছিল, পরযেমানুষের কান্না দেখে তাদের ভারি আমোদ বোধ হল। নিবাণদীপ শয়নঘরে বিছানার অন্ধকারের মধ্যে চার প্রথমে পাশ ফিরিয়া শুইল, তাহার পর হঠাৎ তাড়াতাড়ি বিছানা ছাড়িয়া চলিয়া গেল। ভূপতি চকিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “চার অসংখ করেছে ?” কোনো উত্তর না পাইয়া সেও উঠিল। পাশের বারান্দা হইতে চাপা কান্নার শব্দ