পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&& O 搬 গল্পগুচ্ছ অবশেষে নিত্য তাঁহার যে-সব বিষয়ে বিভ্ৰাট ঘটে বাপকে সে সম্বন্ধে সে বারবার সতক করিয়া দিল। আহার সবন্ধে আমার বশরের যথেষ্ট সংযম ছিল না— গটিকয়েক অপথ্য ছিল, তাহার প্রতি তাঁহার বিশেষ আসক্তি— বাপকে সে-সমস্ত প্রলোভন হইতে যথাসম্পভব ঠেকাইয়া রাখা মেয়ের এক কাজ ছিল। তাই আজ সে বাপের হাত ধরিয়া উদবেগের সহিত বলিল, “বাবা, তুমি আমার কথা রেখো— রাখবে ?” বাবা হাসিয়া কহিলেন, “মানুষ পণ করে পণ ভাঙিয়া ফেলিয়া হফি ছাড়িবার জন্য, অতএব কথা না-দেওয়াই সব চেয়ে নিরাপদ ।” তাহার পর বাপ চলিয়া আসিলে ঘরে কপাট পড়িল। তাহার পরে কী হইল কেহ জানে না। বাপ ও মেয়ের আশ্রহেীন বিদায়ব্যাপার পাশের ঘর হইতে কৌতুহলী অন্তঃ পরিকার দল দেখিল ও শনিল। অবাক কাণ্ড! খোট্টার দেশে থাকিয়া খোট্রা হইয়া গেছে! মায়ামমতা একবারে নাই ! আমার শবশরের বন্ধ বনমালীবাবই আমাদের বিবাহের ঘটকালি করিয়াছিলেন। তিনি আমাদের পরিবারেরও পরিচিত। তিনি আমার বশরকে বলিয়াছিলেন, “সংসারে তোমার তো ঐ একটি মেয়ে। এখন ইহাদেরই পাশে বাড়ি লইয়া এইখানেই জীবনটা কাটাও ।” তিনি বলিলেন, “যাহা দিলাম তাহা উজাড় করিয়াই দিলাম। এখন ফিরিয়া তাকাইতে গেলে দুঃখ পাইতে হইবে। অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মতো এমন বিড়ম্ববনা আর নাই ।” সব-শেষে আমাকে নিভৃতে লইয়া গিয়া অপরাধীর মতো সসংকোচে বলিলেন, “আমার মেয়েটির বই পড়িবার শখ, এবং লোকজনকে খাওয়াইতে ও বড়ো ভালোবাসে । এজন্য বেহাইকে বিরক্ত করিতে ইচ্ছা করি না। আমি মাঝে মাঝে তোমাকে টাকা পাঠাইব । তোমার বাবা জানিতে পারিলে কি রাগ করিবেন।” প্রশ্ন শনিয়া কিছ আশ্চর্য হইলাম। সংসারে কোনো-একটা দিক হইতে অর্থ”সমাগম হইলে বাবা রাগ করিবেন, তাঁহার মেজাজ এত খারাপ তো দেখি নাই । যেন ঘষে দিতেছেন এমনিভাবে আমার হাতে একখানা একশো টাকায় নোট গজিয়া দিয়াই আমার বশর দ্রুত প্রস্থান করিলেন ; আমার প্রশাম লইবার জন্য সবর করিলেন না। পিছন হইতে দেখিতে পাইলাম, এইবার পকেট হইতে রমাল वाश्द्रि झट्टैठण । আমি স্তৰ হইয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম। মনে বকিলাম, ই-হারা অন্য জাতের মানুষ। কধাদের অনেককেই তো বিবাহ করিতে দেখিলাম। মৰ্ম্ম পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই গীটিকে একেবারে এক গ্রাসে গলাধঃকরণ করা হয়। পাকযন্ত্রে পেশছিয়া কিছুক্ষণ বাদে এই পদার্থটির নানা গলাগপ প্রকাশ হইতে পারে এবং ক্ষণে ক্ষণে আভ্যন্তরিক উদবেগ উপস্থিত হইয়াও থাকে, কিন্তু রাস্তাটকতে কোথাও কিছুমার বাধে না। আমি কিন্তু বিবাহসভাতেই বকিয়াছিলাম, দানের মঙ্গে সাঁকে যেটকু পাওয়া যায় তাহতে