পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোটমী もも● কাকে ভক্তি করিস তুই ? বিশ্বের লোকে যে তাকে মন্দ বলে। হাঁগো, সকলে নাকি তোমাকে গালি দেয় ?” কেবল এক মহত্যের জন্য মনটা সংকুচিত হইয়া গেল। কালীর ছিটা এত দরেও ছড়ায় ! বোটমী বলিল, “বেণী ভাবিয়াছিল, আমার ভক্তিটাকে এক ফয়ে নিবাইয়া দিবে। কিন্তু, এ তো তেলের বাতি নয়, এ যে আগন! আমার গেীর, ওরা তোমাকে গালি দেয় কেন গো ।” আমি বলিলাম, “আমার পাওনা আছে বলিয়া। অামি হয়তো একদিন লকোইয়া উহাদের মন চুরি করিবার লোভ করিয়াছিলাম।” বোটমী কহিল, “মানুষের মনে বিষ যে কত সে তো দেখিলে। লোভ আর টি-কিবে না।” আমি বলিলাম, “মনে লোভ থাকিলেই মারের মখে থাকিতে হয়। তখন নিজেকে মারিবার বিষ নিজের মনই জোগায় । তাই আমার ওঝা আমারই মনটাকে নিবিৰ করিবার জন্য এত কড়া করিয়া ঝাড়া দিতেছেন।” বোটমী কহিল, “দয়াল ঠাকুর মারিতে মারিতে তবে মারকে খেদান। শেষ পর্যন্ত যে সহিতে পারে সেই বাঁচিয়া যায়।” সেইদিন সন্ধ্যার সময় অন্ধকার ছাদের উপর সন্ধ্যাতারা উঠিয়া আবার অঙ্গত গেল; বোটমী তাহার জীবনের কথা আমাকে শনাইল — আমার স্বামী বড়ো সাদা মানুষ। কোনো কোনো লোকে মনে করিত, তাঁহার ব্যকিবার শক্তি কম। কিন্তু, আমি জানি, যাহারা সাদা করিয়া বুঝিতে পারে তাহারাই মোটের উপর ঠিক বোঝে। ইহাও দেখিয়াছি, তাঁহার চাষবাস জমিজমার কাজে তিনি যে ঠকিতেন তাহা নহে । বিষয়কাজ এবং ঘরের কাজ দুইই তাঁহার গোছালো ছিল। ধান-চাল-পাটের সামান্য যে একটা ব্যাবসা করিতেন কখনো তাহাতে লোকসান করেন নাই। কেননা, তাঁহার লোভ অলপ। যেটুকু তাঁহার দরকার সেটুকু তিনি হিসাব করিয়া চলিতেন; তার চেয়ে বেশি বা তাহা তিনি বঝিতেনও না, তাহাতে হাতও দিতেন না। আমার বিবাহের পবেই আমার বশর মারা গিয়াছিলেন এবং আমার বিবাহের অলপদিন পরেই শাশুড়ির মৃত্যু হয়। সংসারে আমাদের মাথার উপরে কেহই छ्ठिन मा । আমার স্বামী মাথার উপরে একজন উপরওয়ালাকে না বসাইয়া থাকিতে পারিতেন না। এমন-কি, বলিতে লক্ষজা হয়, আমাকে যেন তিনি ভক্তি করিতেন । তব আমার বিশ্বাস, তিনি আমার চেয়ে বঝিতেন বেশি, আমি তাঁহার চেয়ে বলিতম বেশি। তিনি সকলের চেয়ে ভক্তি করিতেন তাঁহার গরেক্টাকুরকে। শধে ভক্তি নয়, সে ভালোবাসা— এমন ভালোবাসা দেখা যায় না। { গরষ্ঠাকুর তাঁর চেয়ে বয়সে কিছু কম। কী সন্দের রপে তাঁর।