পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्राठिणग्ना ᏩᎸ জলিখা বস্ত হইয়া কহিল, “কেও !” স্বর শনিয়া যবেক চোখ ছাড়িয়া দিয়া সম্মখে আসিয়া দাঁড়াইল; জলিখার মখের দিকে চাহিয়া অম্লানবদনে কহিল, “তুমি তো তিন্নি নও।” যেন জলিখা বরাবর আপনাকে তিন্নি’ বলিয়া চালাইবার চেষ্টা করিতেছিল, কেবল যুবকের অসামান্য তীক্ষবিধির কাছে সমস্ত চাতুরী প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। জলিখা বসন সম্বরণ করিয়া দপ্তভাবে উঠিয়া দড়িাইয়া দুই চক্ষে অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করিল। জিজ্ঞাসা করিল, "কে তুমি।” যবেক কহিল, "তুমি আমাকে চেন না। তিন্নি জানে। তিন্নি কোথায় ।” তিন্নি গোলযোগ শুনিয়া বাহির হইয়া আসিল । জলিখার রোষ এবং যবেকের হতবন্ধি বিসিমতমুখ দেখিয়া আমিনা উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল। কহিল, "দিদি, ওর কথা তুমি কিছু মনে করিয়ো না। ও কি মানুষ। ও একটা বনের মাগ। যদি কিছু বেয়াদবি করিয়া থাকে আমি উহাকে শাসন করিয়া দিব – দালিযা, তুমি কী করিয়াছিলে।” যবেক তৎক্ষণাং কহিল, “চোখ টিপিয়া ধরিয়াছিলাম। আমি মনে করিয়াছিলাম তিলি। কিন্তু ও তো তিন্নি নয়।” তিনি সহসা দুঃসহ ক্ৰোধ প্রকাশ করিয়া উঠিয়া কহিল, “ফের ! ছোটো মুখে বড়ো কথা ! কবে তুমি তিমির চোখ টিপিয়াছ। তোমার তো সাহস কম নয়।” যবেক কহিল, “চোখ টিপিতে তো খুব বেশি সাহসের দরকার করে না : বিশেষত পরের অভ্যাস থাকিলে। কিন্তু সত্য বলিতেছি তিমি, আজ একটা ভয় পাইয়। গিয়াছিলাম।” বলিয়া গোপনে জলিখার প্রতি আগলি নির্দেশ করিয়া আমিনার মরখের দিকে চাহিয়া নিঃশব্দে হাসিতে লাগিল । আমিনা কহিল, "না, তুমি অতি কবর। শাহজাদীর সম্মুখে দাঁড়াইবার যোগ্য নও । তোমাকে সম্ভবত শিক্ষা দেওয়া আবশ্যক । দেখো, এমনি করিয়া সেলাম করো ।” বলিয়া আমিনা তাহার যৌবনমঞ্জরিত তনলতা অতি মধর ভঙ্গীতে নত করিয়া জলিখাকে সেলাম করিল। যবেক বহন কষ্টে তাহার নিতান্ত অসম্পণে অনুকরণ করিল। বলিল, “এমনি করিয়া তিন পা পিছ হঠিয়া আইস।” যবেক পিছ হঠিয়া আসিল । “অালার সেলাম করো।” আবার সেলাম করিল। এমনি করিয়া পিছ হঠাইয়া, সেলাম করাইয়া, আমিনা যুবককে কুটিরের বারের কাছে লইয়া গেল । কহিল, “ঘরে প্রবেশ করো।” যবেক ঘরে প্রবেশ করিল। আমিনা বাহির হইতে ঘরের বার রাধ করিয়া দিয়া কহিল, “একটা ঘরের কাজ করো। আগনটা জালাইয়া রাখো।" বলিয়া দিদির পাশে আসিয়া বসিল । কহিল, “দিদি, রাগ করিস নে ভাই, এখানকার মানুষগুলো এইরকমের। হাড় জবালাতন হইয়া গেছে।” কিন্তু আমিনার মখে কিবা ব্যবহারে তাহার লক্ষণ কিছই প্রকাশ পায় না।