পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাইফোঁটা “ । &bfa ইহার মধ্যে প্রসন্নর হাত আছে, এমন সন্দেহ করিতে পারিতাম। কিন্তু, সন্দেহ করিতে কোনোমতেই ইচ্ছা হইল না। বাড়ি ফিরিয়া আসিলে প্রসন্ন আমার হাতে একখানা বই দিয়া বলিল, “খোলো দেখি।” খুলিতেই যে পাতা বাহির হইল তাহাতে ইংরাজিতে লেখা, বাণিজ্যে আশচয সফলতা। সেইদিনই অনকে দেখিতে গেলাম। স্বামীর সঙ্গে মফঃস্বলে ফিরিবার সময় বারবার ম্যালেরিয়া জনরে পড়িয়া অনর এখন এমন দশা যে ডাক্তাররা ভয় করিতেছে, তাকে ক্ষয়রোগে ধরিয়াছে। কোনো ভালো জায়গায় যাইতে বলিলে সে বলে, “আমি তো আজ বাদে কাল মরিবই, কিন্তু আমার সবোধের টাকা আমি নষ্ট করিব কেন।”—এমনি করিয়া সে সবোধকে ও সবোধের টাকাটিকে নিজের প্রাণ দিয়া পালন করিতেছে। আমি গিয়া দেখিলাম, অনরে রোগটি তাকে এই পথিবী হইতে তফাত করিয়া দিয়াছে। আমি যেন তাকে অনেক দরে হইতে দেখিতেছি। তার দেহখানি একেবারে সবচ্ছ হইয়া ভিতর হইতে একটি আভা বাহির হইতেছে। যা-কিছু পথলে সমস্ত ক্ষয় করিয়া তার প্রাণটি মৃত্যুর বাহির-দরজায় সবগের আলোতে আসিষা দাঁড়াইয়াছে। আর, সেই তার করণ দুটি চোখের ঘন পল্লব! চোখের নীচে কালী পড়িয়া মনে হইতেছে, যেন তার দটির উপরে জীবনান্তকালের সন্ধ্যার ছায়া নামিয়া আসিয়াছে। আমার সমস্ত মন সতৰধ হইয়া গেল, আজ তাহাকে দেবী বলিয়া মনে হইল । আমাকে দেখিয়া অনরে মুখের উপর একটি শান্ত প্রসন্নতা ছড়াইয়া পড়িল । সে বলিল, “কাল রাত্রে আমার অসুখ যখন বাড়িয়াছিল তখন হইতে তোমার কথাই ভাবিতেছি। আমি জানি, আমার আর বেশি দিন নাই। পরশ ভাইফোঁটাৰ দিন, সেদিন আমি তোমাকে শেষ ভাইফোঁটা দিয়া যাইব ।” ாத টাকাব কথা কিছুই বলিলাম না। সবোধকে ডাকাইয়া আনিলাম। তার বয়স সাত । চোখদুটি মায়েরই মতো। সমস্তটা জড়াইয়া তার কেমন-একটি ক্ষণিকতার ভাব, পথিবী যেন তাকে পরা পরিমাণ স্তন্য দিতে ভুলিয়া গেছে । কোলে টানিয়া তার কপাল চুম্বন করিলাম। সে চুপ করিযা আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। প্রসন্ন জিজ্ঞাসা করিল, “কণী হইল।” আমি বলিলাম, “আজ আর সময় হইল না।” সে কহিল, “মেয়াদের আর নয় দিন মাত্র বাকি ৷” অনরে সেই মুখখানি, সেই মৃত্যুসরোবরের পদমটি, দেখিয়া অবধি সবনাশকে আমার তেমন ভয়ংকর বলিয়া মনে হইতেছিল না । কিছুকাল হইতে হিসাবপত্র দেখা ছাড়িয়া দিয়াছিলাম। কল দেখা যাইত না বলিয়া ভয়ে চোখ বজিয়া থাকিতাম। মরিয়া হইয়া সই করিয়া যাইতাম বকিবার চেষ্টা করিতাম না। ভাইফোঁটার সকালবেলায় একখানা হিসাবের চুম্বক ফদ লইয়া জোর করিয়া প্রসন্ন আমাকে কারবারের বর্তমান অবস্থাটা বঝোইয়া দিল। দেখিলাম, মলধনের সমস্ত তলা একেবারে ক্ষইয়া গেছে। এখন কেবলই ধারের টাকায় জল সে’চিয়া না कालाल नौकाछूवि श्रुत । কৌশলে টাকার কথাটা পাড়িবার উপায় ভাবিতে ভাবিতে ভাইফোঁটার নিমন্ত্রণে