পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

વ ૭ ર গল্পগুচ্ছ ফেলি, পায়ে বড়ো ব্যথা করছে। ভাগ্যে বলি নি – মিথ্যে কথাটা মনের মধ্যে যখন ইতস্তত করছে ঠিক সেই সময়ে অনাথাসদনের ত্রৈমাসিক রিপোট হাতে অমিয়ার প্রবেশ । হরিমতির পাখা-দোলনের মধ্যে হঠাৎ চমক লাগল ; তার হৃৎপিণ্ডের চাঞ্চল্য ও মুখশ্রীর বিবণতা আন্দাজ করা শক্ত হল না। অনাথাসদনের এই সেক্রেটারির ভয়ে তার পাখার গতি খুব মদ হয়ে এল। অমিয়া বিছানার এক ধারে বসে খুব শক্ত সরে বললে, "দেখো দাদা, আমাদের দেশে ঘরে ঘরে কত আশ্রয়হারা মেয়ে বড়ো বড়ো পরিবারে প্রতিপালিত হয়ে দিন কাটাচ্ছে, অথচ সে-সব ধনীঘরে তাদের প্রয়োজন একটুও জরুরি নয়। গরিব মেয়ে, যারা খেটে খেতে বাধ্য, এরা তাদেরই অন্ন-অজ’নে বাধা দেয় মাত্র। এরা যদি সাধারণের কাজে লাগে, যেমন আমাদের অনাথাসদনের কাজ– তা হলে—” বাঝলেম, আমাকে উপলক্ষ করে হরিমতির উপরে বস্তৃতার এই শিলাবৃষ্টি। আমি বললেম, “অর্থাৎ, তুমি চলবে নিজের শখ-অনুসারে, আর আশ্রয়হীনারা চলবে তোমার হরকুম-আনসারে। তুমি হবে অনাথাসদনের সেক্রেটারি, আর ওরা হবে অনাথাসদনের সেবাকারিণী ! তার চেয়ে নিজেই লাগো সেবার কাজে ; বুঝতে পারবে, সে কাজ তোমার অসাধ্য। অনাথাদের অতিষ্ঠ করা সহজ, সেবা করা সহজ নয়। দাবি নিজের উপরে করো, অন্যের উপরে কোরো না।” আমার ক্ষত্রস্বভাব, মাঝে মাঝে ভুলে যাই অক্ৰোধেন জয়েং ক্ৰোধম । ফল হল এই যে, অমিয়া পিসিমারই সদস্যদের মধ্য থেকে আর-একটি মেয়েকে এনে হাজির করলে— তার নাম প্রসন্ন। তাকে আমার পায়ের কাছে বসিয়ে দিয়ে বললে, “দাদার পায়ে ব্যথা করে, তুমি পা টিপে দাও।” সে যথোচিত অধ্যবসায়ের সঙ্গে আমার পা টিপতে লাগল। এই হতভাগ্য দাদা এখন কোন মুখে বলে যে তার পায়ে কোনোরকম বিকার হয় নি। কেমন করে জানায় যে এমনতরো টেপাটেপি করে কেবলমাত্র তাকে অপদস্ত করা হচ্ছে। মনে মনে বঝেলেম, রোগশয্যায় রোগীর আর পথান হবে না। এর চেয়ে ভালো, নববঙ্গের ভাইফোঁটা-সমিতির সভাপতি হওয়া । পাথার হাওয়া আস্তে আস্তে থেমে গেল। হরিমতি পষ্ট অনুভব করলে, অসটা তারই উদ্দেশে । এ হচ্ছে প্রসন্নকে দিয়ে হরিমতিকে উৎখাত করা। কণ্টকেনেব কণ্টকম। একট পরে পাখাটা মাটিতে রেখে সে উঠে দাঁড়ালো। আমার পায়ের কাছে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করে আস্তে আস্তে দই পায়ে হাত বলিয়ে চলে গেল। আবার আমাকে গীতা খলতে হল। তবুও লোকের ফাঁকে ফাঁকে দরজার ফাঁকের দিকে চেয়ে দেখি– কিন্তু, সেই একটখানি ছায়া আর কোথাও দেখা গেল না। তার বদলে প্রসন্ন প্রায়ই আসে, প্রসলের দন্টাতে আরও দুই-চারিটি মেয়ে অমিয়ার দেশবিশ্রত দেশভক্ত দাদার সেবা করবার জন্যে জড়ো হল। অমিয়া এমন ব্যবস্থা করে দিলে, যাতে পালা করে আমার নিত্যসেবা চলে। এ দিকে শোনা গেল, হরিমতি একদিন কাউকে কিছ না বলে কলকাতা ছেড়ে তার পাড়াগাঁয়ের বাড়িতে চলে গেছে । মাসের বারোই তারিখে সম্পাদক-বন্ধ এসে বললেন, “একি ব্যাপার। ঠাট্ট নাকি ৷ ५:ई कि टाघाब्र कळाव्र खख्छिठा ।”