পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ww. *iअम९क्षद् পড়তে লাগলেন ; কেননা, মাসের পর মাস মেয়েরও বয়েস বেড়ে যেতে লাগল, এবং সেই সঙ্গে এবং সেই অনুপাতে লোকনিন্দার মাত্ৰাও বেড়ে যেতে লাগল। এই পারিবারিক অশান্তির ভিতর একমাত্র প্রাণী যে শান্ত ছিল, সে হচ্ছে শ্ৰীমতী। এই সব লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, নিন্দ, কুৎসা তাকে কিছুমাত্র বিচলিত করেনি। তার কারণ, তার মনের উপর যে বরফ পড়েছিল তা এতদিনে জমে পাথর হয়ে গিয়েছিল। নিন্দাবাদ প্রভৃতি তুচ্ছ জিনিসের ক্ষুদ্র কষ্ট সে-মনকে স্পর্শ করতে পারত না। তার এই স্থির ধীর আত্মপ্রতিষ্ঠ ভাবকে গ্রামের লোক ংকার বলে ধরে নিলে। এর ফলে, শ্ৰীমতীর বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষবুদ্ধি এতটা বেড়ে গেল যে, শ্যামলাল আর সহ্য করতে না পেরে, মেয়েকে নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাবার জন্য প্ৰস্তুত হলেন । তিনি মনে করলেন, মেয়ের কপালে যা লেখা থাকে। তাই হবে, এ উপস্থিত উপদ্রবের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করা তার পক্ষে একান্ত কর্তব্য । শ্যামলাল খুড়োমহাশয়কে তঁর অভিপ্ৰায় জানালেন, তিনিও তাতে কোন আপত্তি করলেন না। খুড়োমহাশয় বুঝলেন, আর কিছুদিন থাকলে তঁকে স্বীকার করতেই হবে যে, তিনি অকৃতকাৰ্য হয়েছেন। কিন্তু সময় থাকতে যদি শ্যামলাল বিদায় হন, তাহলে তিনি পাঁচজনকে বলতে পারবেন যে, শ্যামলাল আত অধীর না হলে তিনি নিশ্চয়ই তার মেয়ের ভাল বিয়ে দিয়ে দিতে পারতেন। অতঃপর পাঁজিপুথি দেখে শ্যামলালের যাত্রা করবার দিন স্থির হল । যেদিন শ্যামলালের বাড়ী ছাড়বার কথা ছিল, তার আগের দিন তার , খুড়োমহাশয় বেলা বারোটার সময় হাসতে হাসতে শ্যামলালের কাছে এসে বললেন, “বাবাজি ! তোমাকে আর কাল বাড়ী ছাড়তে হবে না। তোমার মেয়ের বর ঠিক হয়ে গেছে। উপরে ত ভগবান আছেন, তিনি কি আমাদের পরিবারে একটা কলঙ্ক হতে দেবেন ?” শ্যামলাল একেবারে আনন্দে অধীর হয়ে জিজ্ঞেস করলেন —GKF ? -ক্ষেত্রপতি মুখুয্যে।