রাম ও শ্যাম S IV চোটে আমিও ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছিলুম। চােরবাগানের মোড় গিয়ে যখন দেখলুম যে, চিৎপুরের দুধার থেকে রাম-শ্যামের মাথায় পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছে, তখন আমার চােখে জল এসেছিল । আর কোনও গুণের না হোক, পেটিয়টিজমের সম্মান যে বাঙালী করতে জানে, সেদিন 丐f召 প্ৰমাণ হয়ে গেল । এইখান থেকেই দেশ আবার মোড় ফিরলে ; অর্থাৎ এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই স্বদেশী আন্দােলন উপরের চাপে বসে গেল। কত ঢাপোষা লোকের চাকরি গেল, কত ছেলের স্কুল থেকে নাম কাটা গেল, কত যুবক রাজদণ্ডে দণ্ডিত হল, বাদবাকী আমরা সব একদম দােম গেলুম। রাম-শ্যামের গায়ে কিন্তু আঁচড়টি পর্যন্ত লািগল না। অনেক কথা বলে কিছু না-বলার আর্টের যে কি গুণ, এবার তার পরিচয় পাওয়া গেল। তারা অবশ্য দামও গেলেন না। এ দুই ভাই এই তাঙ্গামার ভিতর থেকে শুধু যে অক্ষত শরীরে বেরিয়ে এলেন তাই নয়, তাদের মনেরও কোন জায়গায় আঘাত লাগল না ; কেননা স্বদেশীর সকল কথাই দিবারাত্র তাদের মুখের উপরই ছিল, তার একটি কথাও তাঁদের বুকের ভিতর প্রবেশ করবার ফুরসৎ পায়নি! রামের ওকালতির সনন্দ আর শ্যামের খবরের কাগজ দুই-ই অবশ্য তঁাদের হাতেই রয়ে গেল। তারপর দেশ যখন জুড়োল, তখন রামের ওকালতির পশার ও শ্যামের কাগজের প্রসার, শুক্লপক্ষের চন্দ্রের মত দিনের পর দিন আপনা হতেই বেড়ে যেতে লাগল। সেক্সপিয়র বলেছেন যে, মানুষমাত্রেরই জীবনে এমন একটা জোয়ার আসে, যার बूंति চেপে ধরতে পারলে তার কঁধে চড়ে যেখানে প্ৰাণ চায়, সেখানেই যাওয়া যায়। যে স্বদেশীর জোয়ারে আমরা সকলেই হাবুডুবু খেলুম। এবং অনেকে একেবারে ডুবে গেল, রাম-শ্যাম তার কঁধে চড়ে একজন বড় উকিল আর একজন বড় এডিটার হতে চললেন ।