পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-লোহিতের সৌরাষ্ট-লীলা ( ) ) পূজোর নম্বর ‘বসুমতীর জন্য একটি গল্প লিখে দিতে বহুদিন থেকে প্রতিশ্রুত আছি। নানা কর্ষে ব্যস্ত থাকায় এতদিন লেখায় তাত দিতে পারিনি । আজ ঘুম থেকে উঠেই সঙ্কল্প করলুম যে, যা থাকে কপালে, একটা গল্প সূর্য ডোববার আগেই লিখে শেষ করব। তারপর কলম হাতে নিয়ে দেখি যে, আমার মাথার ভিতর এখন আর কিছুই নেই-এক কংগ্রেস ছাড়া। আর কংগ্রেসের গল্প আমি পারি শুধু পড়তে, লিখতে নয়। কেননা দিল্লীতে আমি যাইনি। এ অবস্থায় নিজের মাথা থেকে গল্প বার করা অসম্ভব দেখে একটা, অপরের জানা না হােক, আমার শোনা গল্প লেখাই স্থির করলুম। এ গল্পটি আমি নীল-লোহিতের মুখে শুনেছিলুম। নীল-লোহিত লোকটি যে কে, তা অবশ্য আপনি জানেন। গত বৎসর এই সময়ে র্তার সবিশেষ পরিচয় 'মাসিক বসুমতী’তে দিয়েছি। আর আপনার কাগজের পাঠক সম্প্রদায়েরও অনেকেরষ্ট বোধ হয় নীললােঠিতের কথা স্মরণ আছে । আমার জনৈক ব্রাত্য-ক্ষত্ৰিয় বন্ধু একদিন আমার কাছে প্রমাণ করতে চেষ্টা করছিলেন যে, বর্তমান “বেদ” জাল, আর এ জাল ব্ৰাহ্মণরা করেছে। তাঁর বক্তব্য ছিল এই যে, মূল বেদ যখন প্রলয়পয়োধিজলে নিমগ্ন হয়েছিল, তখন অবশ্য তার বেবাক অক্ষর ধুয়ে গেচল। এ অকাট্য যুক্তি শুনে আমি হাস্য সংবরণ করতে পারিনি। ফলে বন্ধুবর একেবারে উগ্র-ক্ষত্রিয় হয়ে উঠে আমাকে সরোধে বলেন যে, তাঁর কথা আমি বুঝতে পারব না, যেহেতু, আমরা ব্ৰাহ্মণরা বাস করি ব্ৰহ্মার সৃষ্ট জগতে, আর তঁরা বাস করেন বিশ্বামিত্রের জগতে। কথাটা শুনে আমি প্ৰথমে 8