পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-লোহিত্যের সৌরাষ্ট-লীলা }8) “কংগ্রেস-ক্যাম্পে না গিয়ে এখানে কেন এলে ?” “পথ ভুলে।” “টঙ্গায় চড়লে টঙ্গাওয়াল ত তোমাকে ঠিক জায়গায় নিয়ে যেত!” “আমার ব্যাগ, বিছানা সব স্টেশনে হারিয়ে গিয়েছে। টাকাকড়ি সব ব্যাগের ভিতরে ছিল। তাই টঙ্গা ভাড়া করবার পয়সা কাছে না থাকায় হেঁটে বেরিয়েছিলুম। তারপর তিন চার ঘণ্টা ঘোরণার পর এখানে এসে পৌঁছেছি।” “এ বাড়ীতে ঢুকলে কিসের জন্য ?” “আলো দেখে ও সঙ্গীত শুনে ৷” “পরের বাড়ীতে না বলী-কওয়া প্ৰবেশ করতে তোমার দ্বিধা হল না ?” “যে জলে ডোবে, সে বঁাঁচবার জন্য হাতের গোড়ায় যা পায়, তাই চেপে ধরে। আমি উপবাসে মৃতপ্ৰায়। কিছু খেতে পাই কিনা দেখবার জন্য এখানে প্রবেশ করেছি।-বাড়ী কার, তা ভাববার আমার সময় ছিল না। ঝাড় লণ্ঠন দেখে বুঝলুম—এ বাড়ীতে অন্নকষ্ট নেই, আর গান শুনে বুঝলুম, এ বাড়ীতে প্লেগ নেই।” নীল-লোহিতের কথা শুনে স্ত্রীলোকটির মনে করুণার উদয় হল । তিনি তঁাকে ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে বসলেন। আর দাসীদের ডেকে বললেন, নীল-লোহিতের জন্য খাবার আনত। তাই শুনে নীললোহিতের ধড়ে আবার প্রাণ এল। তিনি এক নজরে ঘরটি দেখে নিলেন। নীচে কাশ্মীরী গালিচা পাতা, আর ঘর পোৱা বাদ্যযন্ত্র। তিনি গৃহকত্রীকে তঁর পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি হেসে উত্তর দিলেন,- “তোমরা যা হতে চােচ্ছ, আমি তাই।” “অর্থাৎ ?” “আমি স্বাধীন।” এর পর বড় বড় রূপার থালায় করে দাসীরা দেদার ফল-মিষ্টি নিয়ে এসে হাজির করলে। নীল-লোহিত আহারে বসে গেলেন। সে