পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ryo গল্পসংগ্ৰহ hero”, তারপর হুররে হুররে শব্দে সভাগৃহ কেঁপে উঠল। দেখলুম। এরা সত্যসত্যই sportsmen বটে। এদের মধ্যে একমাত্র লিপিবীর ক্ৰোধকম্পান্বিত কলেবর হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে বললেন—“এ মুখের দলে ঢোকাই আমার ভুল হয়েছিল। রাজাবাহাদুরের মত বাঙালীদের আজও এ জ্ঞান হয়নি যে, গোয়ার ও বীর এক জিনিস নয়। যাই একবার কলকাতায় ফিরে, এ বিষয়ে একটি চুটিয়ে আর্টিকেল লিখব।” তিনি মনের আক্ষেপ এই কটি কথায় প্ৰকাশ করে, দ্রুতপদে জ্ঞানবীরদের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে তাদের কাণে কি মন্ত্র দিতে লাগলেন । একটু পরে রাজাবাহাদুর অতি ধীর গম্ভীর বুনিয়াদী গলায় বললেন— “আমার মেয়ে যখন স্বেচ্ছায় স্বয়ং তোমাকে বরণ করেছে, তখন এ বিবাহে আমার কোন ন্যায্য আপত্তি থাকতে পারে না। আমি শুধু ভাবছি, তুমি ব্ৰাহ্মণ-সন্তান আর মালগ্ৰী ক্ষত্ৰিয়-কন্যা ; সুতরাং এ বিবাহ কি শাস্ত্রসঙ্গত হবে ?” আমি বললুম পণে জাতি কেবা চায়, পণে জাতি কেবা চায়। প্ৰতিজ্ঞায় যেই জিনে সেই লয়ে যায় ৷ দেখ পুরাণ প্রসঙ্গ, দেখা পুরাণ প্রসঙ্গ । যথা যথা পাণ, তথা তথা এই রঙ্গ ৷ এ কথা শুনে জ্ঞানবীরদের দলের একজন দোজবরে D. L. দাড়িয়ে উঠে বললেন— “এ বিয়ে দিতে চান দিন, তাতে আমাদের কোন আপত্তি নেই, কিন্তু এইটুকু শুধু জেনে রাখবেন যে তা সম্পূৰ্ণ illegal হবে। মনুর মতেও তাই, মিতাক্ষরা মতেও তাই। উদ্ধাহতত্ত্ব সম্বন্ধে ভারতচন্দ্ৰ authority নন, কারণ বিদ্যাসুন্দরকে কোনমতেই ধর্মশাস্ত্র বলা যায় না। যদি এ বিষয়ে শেষ কথা আর সার কথা জানতে চান ত Sir Gurudas-As Marriage & Stridhan পড়ুন। আর ও বই পড়া আপনার নিতান্ত দরকার, কারণ এ ক্ষেত্রে শুধু marriage নয়, স্ত্রীধনের কথাও রয়েছে।