পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীল-লোহিতের আদিগ্ৰেম Ry নীললোহিতের এ কথা শুনে আমরা সকলে চুপ করে থাকাই সঙ্গত মনে করলুম। শুধু শ্ৰীভূষণ বললে যে, চণ্ডীদাস লিখেছেন জনম অবধি পীরিত বেয়াধি অন্তরে রহিল মোর, থাকিয়া থাকিয়া জাগিয়া ওঠে, জ্বালার নাহিক ওর। চণ্ডীদাসের উক্তি যে সত্য-নীল-লোহিত তার প্রমাণ। নীললোহিত প্রতিবাদ করে বললেন যে, চণ্ডীদাসের কথা সত্য হত, যদি তিনি ঐ ব্যাধি শব্দটা ব্যবহার না করতেন। অনিল পাছে ঐ বাধি নিয়ে একটা তর্ক বাধায়, এই ভয়ে আমি প্রস্তাব করলুম যে, প্রেম জিনিষট ব্যাধি কিনা, তা নিয়ে পরে তর্ক করা যাবে; এখন নীললোহিতের আদিগ্রেপ্রমের উপাখ্যান শোনা যাক। আমনি নীল-লোহিত তার বর্ণনা সুরু করলেন। νευ নীল-লোহিত এই বলে তাঁর গল্পের সূত্রপাত করলেন যে, এ গল্প তোমাদের বলতুম না, কারণ প্রেম যে কি বস্তু তা যারা মৰ্মে মৰ্মে অনুভব করেছে, তারা পাঁচজনের কাছে প্রেমের ব্যাখ্যান করে না ; করে তারাই, যারা প্রেমের শুধু নাম শুনেছে, কিন্তু রূপ দেখেনি-যথা আধাত্মিক কবির। আর দেহতাত্ত্বিক বৈজ্ঞানিকেরা। এ কথা যে সত্য, তার প্রমাণ তোমরা হাতে হাতেই পেলে। কবি শ্ৰীভূষণ প্রেমকে এত উঁচুতে ঠেলে তুললেন যে, দূরবীক্ষণের সাহায্যেও তার সাক্ষাৎ মেলে না ; আর বৈজ্ঞানিক অনিলচন্দ্ৰ তাকে এত নিচুতে নামালেন যে, চোখে অনুবীক্ষণের চশমা এটেও তার সন্ধান পাওয়া যায় না। আজ তোমাদের কাছে যে আমার প্রেমের হাতেখড়ির কথা বলছি, সে শুধু এই কবি ও বৈজ্ঞানিকের মুখ বন্ধ করবার জন্য। এখন ব্যাপার কি ঘটেছিল শোন । আমি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলুম একটি পাড়াগােঁয়ে সঙ্গরে। পাড়াগােঁয়ে । সহর কাকে বলে জান ? সেই লোকালয়—যা সহরাও নয়, পাড়াগাঁও ৷ নয়। ও হচ্ছে এরকম কঁঠালের আমসত্ব। একটি পাড়াগােঁয়ে সহর