পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্পাদক ও বন্ধু ३७ কলেজের ফাস্ট ইয়ার থেকে জানি। তুমি যে সেন্টিমেন্টের কতটা ধার ধার, তা ত আমার জানতে বাকি নেই। তুমি মুখ খুললেই যে মনের চুল চিরােত আরম্ভ করবে, এতদিনে কি তাও বুঝিনি ? মানুষের মন জিনিসটিকে তুমি এক জিনিস বলে কখনই মাননি। তােমার বিশ্বাস, ও-এক হচ্ছে বহুর সমষ্টি । তোমার ধারণা যে, মনের ঐক্য মান তার গডনের ঐক্য। মনের ভিতরকার সব রেখা মিলে তাকে একটা ধরবার ঢ়োবার মত আকার দিয়েছে! আর এসব রেখাই সরল রেখা! তুমিও যে মানসিক বঙ্কিম রেখার সাক্ষাৎ পেয়েছ, এ অবশ্য তোমার পক্ষে একটা নতুন আবিষ্কার। এ আবিষ্কারকাঠিনী শোনবার জন্য আমার কৌতুহল হচ্ছে, অবশ্য সে কৌতুহল scientific কৌতুহল মনে করে। না। ;-তোমার মনের গোপন কথা শোনবার জন্য আমি উৎসুক। —ব্যাপারটা তোমাকে সংক্ষেপে বলছি। শুনলেই বুঝতে পারবে যে, এর ভিতর আমার নিজের মনের কোন কথাই নেই-সরল ও নয়, কুটিলও নয়। এখন শোন। ব্যাপারটা অতি সামান্য। আমি যখন কলেজ থেকে এম. এ. পাস করে বেরই, তখন অতুলের মার সঙ্গে আমার বিয়ের কথা হয়েছিল। প্ৰস্তাবটি অবশ্য কন্যাপক্ষ থেকেই এসেছিল। আমার আত্মীয়রা তাতে সম্মত হয়েছিলেন। তঁদের আপত্তির কোনও কারণ ছিল না, কেননা, ও-পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের বহুকাল থেকে চেনা-শোনা ছিল। ও-পক্ষের কুলশীলের কোনও খুঁত ছিল না, উপরন্তু মেয়েটি দেখতে পরম সুন্দরী না হলেও সচরাচর বাঙালী মেয়ে যেরকম হয়ে থাকে তার চেয়ে নিরেস নয়। বরং সরেস, কারণ তার স্বাস্থ্য ছিল, যা সকলের থাকে না । আমার গুরুজনরা এ-প্ৰস্তাবে আমার মতের অপেক্ষা না রেখেই তাদের মত দিয়েছিলেন। তারা যে আমার মত জানতে চাননি তার একটি কারণ—তারা জানতেন যে, মেয়েটি আমার পূর্ব-পরিচিত। “ওর চেয়ে ভাল মেয়ে পাবে কোথায় ?”—এই छिन्न তীদের মুখের ও মনের কথা। আমার মত জানতে চাইলে তাঁরা একটু মুস্কিলে পড়তেন। কারণ আমি তখন কোন বিয়ের প্রস্তাবে সহজে রাজী