পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাপান খেলা २१७ R বন্ধুবরের নাম করছিনে এই ভয়ে যে, পাছে তাঁর literary ক্ষমতা আছে জানলে তঁর প্রোমোশন বন্ধ হয়। কে না জানে যে, সাহিত্যের মত বেআইনী জিনিষ আর নেই ? তা ছাড়া তিনি যখন লেখক নন, তখন তার নামের কোনও মূল্য নেই। মুন্সেফ বাবু ও ডেপুটি বাবুদের নাম আর কে মনে করে রাখে ? তিনি একদিন আমাকে সম্বোধন করে বললেন যে, “আপনি যদি কিছু মনে না করেন ত, আমার ছেলেবেলার একটা গল্প বলি।” আমি বললুম, “আপনি আপনার ছেলেবেলার গল্প বলবেন, তাতে আমি ক্ষুন্ন হব কেন ?” “তাতে একটা জিনিস আছে, যা আপনার কাণে ভাল না লাগতে পারে। সে জিনিসটে হচ্ছে গল্পের নায়কের নাম। আর লেখকমাত্রেই নামের বিষয়ে বড় sensitive । আপনি মনে করতে পারেন যে, ও নামটি আমি ইচ্ছে করেই রেখেছি—একটু রসিকতা করবার জন্য। কিন্তু আমার ওরকম কোনও কু-মতলব নেই। গল্প যারা বানিয়ে বলে, অর্থাৎ লেখকরা, তাদের অবশ্য নায়ক-নায়িকার নামকরণের স্বাধীনতা আছে। কিন্তু আমার মত যারা সত্য ঘটনা বর্ণনা করে, তাদের যার যে নাম, তা বলা ছাড়া আর উপায় নেই।” এ কথা শুনে আমি তঁকে ভরসা দিলুম যে, “নায়কের নাম যাই হােক না কেন, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। একাধিক লেখকের এক নাম হলেই মুস্কিল, কেননা তাহলে পাঠকরা অন্যের লেখার জন্য আমাদের দায়ী করবে, অথবা আমাদের লেখার দায় অপরের ঘাড়ে চাপাৰে। কিন্তু লেখক আর নায়ক ত এক চিজ নয়। সুতরাং আপনি নিৰ্ভয়ে বলে যান। আপনার গল্পের নায়ক যদি গুণ্ডাও হয়, আর আমার যা নাম, তার নামও যদি তাই হয়, তাইলেও Goonda Act-এ আমি গ্রেপ্তার হব না। আমার মত নিরীহ লেখক বাঙলায় যে দ্বিতীয় নেই, তা কে না জানে ?” বন্ধুবর হেসে বললেন, “তবে বলি, শ্রবণ করুন יץ