পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W9e R গল্পসংগ্ৰহ বিশেষত এই কারণে যে, জায়গাটা দাৰ্জিলিং এর মত ঠাণ্ড নয়, উপরন্তু দাৰ্জিলিং এর মত সেখানে যাত্রীর ভীড় নেই। তাই আমি rest-cureএর লোভে ঐ গিরিশিখরেই আশ্রয় নিই। বলা বাহুল্য, আমার কোনরূপ cure-এর প্রয়োজন ছিল না, প্রয়োজন ছিল শুধু rest-এর। যদিও তখন আমার মাথার চুল পাকতে আরম্ভ করেছে, তবুও আমার রক্তমাংসের দেহ যৌবনের জের টেনে চলেছে। কার্শিয়ং গিয়ে আমার দৈনিক কাজ হল, খাই দাই আর ঘুরে বেড়াই। অবশ্য সেখানে ঘুরে বেড়াবার বেশি জায়গা নেই। তাই আর সকলে যা করে, আমিও তাই করতে আরম্ভ করলুম ; অর্থাৎ সকালে মেল আসবার সময় একবার স্টেসনে হাজির হাতুম, কলকাতা থেকে কে কে দাৰ্জিলিং যাচ্ছে তাই দেখবার জন্য। আর বিকেলে আর একবার হাজির হাতুম, কে কে কলকাতায় ফিরছে। তাই দেখবার জন্য। দাৰ্জিলিং-যাত্রীদের গমনাগমনটাই কার্শিয়ং এর প্রধান দৃশ্য; কারণ সেখানকার একঘেয়ে জীবনে এই সূত্রেই দিনে দুবার বৈচিত্ৰ্য ঘটে। একদিন স্টেসনে আমার কলেজের একটি ভূতপূর্ব ছাত্র রমেনের সঙ্গে দেখা হল। ছোকরাটি আমাদের সকলেরই খুব প্রিয় ছিল ; কেননা প্রথমত সে ছিল প্রিয়দর্শন, তার উপরে সে মন দিয়ে পড়াশুনা করত। তার ধরণধারণ একটু মেয়েলি গোছের ছিল ; ফলে কলেজের খেলোয়াড়-দল তাকে পছন্দ করত না, কিন্তু প্রফেসাররা করত। সে ছোকরা কাশিয়ং-এই নামল ও আমাকে দেখে খুব খুসি হল। বললে, সে শুধু দুদিনের জন্য এখানে এসেছে, তার মাের সঙ্গে দেখা করতে ; আবার পরশুই ফিরে যাবে। তারপর আমাকে তাদের বাড়ী একবার যেতে অনুরোধ করলে। তার মা না কি আমার পরিচয় লাভ করে বড় খুসি হবেন ; আর তা ছাড়া এখানে সুধু তার মা ও ছোট বােন আছেন, আমি তঁদের একটু তত্ত্বাবধানও করতে পারব। তার মার শরীর অসুস্থ, তাই তিনি কার্শিয়ং-এ থাকেন। চাকরবাকর ব্যতীত বাড়ীতে আর কোন পুরুষমানুষ নেই ; তাই চোকরাটি