পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ya গল্পসংগ্ৰহ র্তার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি, তঁর কাছে কোন চিঠিপত্রও পাইনি। তারপর একদিন হঠাৎ তীর কাছ থেকে আদেশ পেলুম রায়নগরে গিয়ে র্তার সঙ্গে একবার দেখা করতে। তাঁর সংকল্পিত ডিসপেনসারি ও স্কুলঘর তৈরী হয়ে গিয়েছে; বাকী আছে শুধু উপযুক্ত মাস্টার ও ডাক্তার সংগ্ৰহ করা। ইতিমধ্যে অবনীভূষণকে একরকম ভুলেই গিয়েছিলুম। তাঁর এই চিঠি পেয়ে সেকালের সব কথা আবার মনে পড়ে গেল, এবং এ ক্ষেত্রে তীর সব কীৰ্তি দেখবার জন্য আমার মনে অত্যন্ত কৌতুহল জন্মল। ফলে আমি পূজোর ছুটিতে রায়নগরে গেলুম। স্কুল চালান সম্বন্ধে তঁকে দুটাে একটা পরামর্শ দেবার মতলবও আমার ছিল । গিয়ে দেখি, অবনীভূষণ সেই কলেজের চােকরাই আছেন। তিনি এ যাবৎ বিবাহ করেননি, কারণ তিনি দেশের জনসাধারণের শিক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা না করে বিবাহ করবেন না প্ৰতিজ্ঞা করেছিলেন। ইতিমধ্যে স্কুল ও ডিসপেনসারির বাড়ী দুটি তৈরী হয়ে গিয়েছিল। সে দুটি ত পাড়াগােঁয়ে স্কুল ও ডাক্তারখানা নয়—ব্রাজপ্রাসাদ। দেখলুম। দেশবিদেশ থেকে সব কারিগর আনিয়ে এই অট্টালিকা দুটিকে অলঙ্কত করা হয়েছে। আমি ব্যাপার দেখে একটু আশ্চর্য হয়ে গেলুম লক্ষ্য করে অবনীভূষণ বললেন-ছেলেবেলা থেকে beautyর মধ্যে বর্ধিত না হলে লোক যথার্থ সুশিক্ষিত হয় না। w তঁাকে সৌন্দর্যের উপাসক হতে শিখিয়েছেন তঁর নতুন friend, philosopher and guide প্যারীলাল। এ ভদ্রলোক রায়পরিবারের একটি পুরানো আমলার ছেলে, অবনীভূষণের জ্ঞাতি সম্পর্কে অগ্ৰজ।। গ্রামেই বাড়ী, কিন্তু থাকেন বেশির ভাগ বিদেশে, এবং মধ্যে মধ্যে আবিভূতি হন। শুনলুম ইনি বি. এ. পাশ করে নানাস্থানে নানারকম কাজ করেছেন। প্ৰথমে জয়পুরে স্কুলমাস্টারী, তারপরে কাশীতে কবিরাজী, তারপরে আউধে কোন তালুকদারের মোসাহেবী। তারপর