পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w 外娜不牢犯 থেকে এ সত্যের উপলব্ধি করেছিলেন। তাই প্যারীলালের মতে ভবযন্ত্রণা থেকে মুক্তির দুটিমাত্র উপায় আছে-এক আর্ট, আরেক ধর্ম। কারণ এ দুটি বস্তুই মৃত্যুকে অতিক্রম করে, এবং মর্ত্যকেও অমৃতলোকে পরিণত করে। এর পর অবনীভূষণ মনস্থির করলেন যে, তিনি ধর্মের শরণাপন্ন হবেন, যে ধর্মকে তিনি এতদিন উপেক্ষা করে আসছিলেন। অতএব তিনি আছোপান্ত শ্ৰীমদ্ভাগবত পাঠ করবেন সংকল্প করলেন। এ শাস্ত্রের সন্ধানও তাকে প্যারীলাল দিয়েছিলেন। ভাগবত তার লাইব্রেরীতেই ছিল, কিন্তু সে বই আর তঁর পড়া হল না। ኳ” এই সময় একটি এমন ঘটনা ঘটল, যাতে করে অবনীভূষণের মনের ও জীবনের গতি নূতন পথে চলে গেল। এ নূতন পথ সর্বনাশের পথ। রায়নগরের সন্নিকট কৃষ্ণপুরে জমিদার কামদাপ্রসাদের কন্যার বিবাহের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে অবনীভূষণ কৃষ্ণপুরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। বাধ্য হয়েছিলেন বলছি। এই কারণে যে, কামদাপ্ৰসাদের জীবনযাত্র ছিল সেকেলে ধরণের। দেশের ও দশের জন্য নূতন কিছু করা কামদাপ্রসাদ এক দিনের জন্যও নিজের কর্তব্য বলে মনে করেন নি। তঁর জীবন ছিল পুরোমাত্রায় বিলাসীর জীবন। তিনি বারোমাস গাইয়ে বাজিয়ে মোসাহেব ও ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতের দ্বারা পরিবৃত থাকতেন—অর্থাৎ তার জীবনের একমাত্র কাজ ছিল আমোদপ্রমোদের চর্চা। অথচ সামাজিক লোকের তিনি অতি প্রিয়পাত্র ছিলেন; কারণ তিনি প্রজাদের উপর কখনও অত্যাচার করেননি, কাউকে কখন রূঢ় কথা বলেননি, গরীবদুঃখী গুরুপুরোহিতকে যথেষ্ট দান করতেন ; এবং কন্যাদায়-মাতৃদায়গ্ৰস্ত নিঃস্ব গৃহস্থদের মুক্তহস্তে সাহায্য করতেন। কামদাপ্রসাদের এই সব হালচাল অবনীভূষণ মোটেই পছন্দ করতেন না। তদ্ব্যতীত এই বিলাসী জীবনকে ভয় করতেন। বিশেষত প্যারিলাল তঁাকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, বিলাসিতার একটা বিষম নেশা আছে, এবং যে লোক এজীবনে অভ্যস্ত নয় ও যার প্রজ্ঞা প্রতিষ্ঠিত