পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\озše ਸ পগেয়া টাটু নয়, ও জাতের ভিতর অনেক মােটা তাজা টাটু আছে— তারা বেদম ছুটতে পারে, আর কখনও কখনও লিবঙের ঘোড়দৌড়ে বাজি জেতে। আমরা আমাদের সাহেবী পোষাকের সঙ্গে যাতে খাপ খায়, সেইজন্যে সব পয়লা-নম্বরের ঘোড়া যোগাড় করেছিলুম। নইলে লোকে দেখলে বলবে কি ? তাড়াতাড়ি চা পান করে আমরা পাঁচবন্ধু পাঁচটি ঘোড়ায় চড়ে বেরিয়ে পড়লুম। কালিম্পঙ্গের রাস্তা ধরে যত দূরে সন্ধের আগে যাওয়া যায়, তত দূর যাব স্থির করলুম। আমি অবশ্য এ দলের পথপ্রদর্শক। আমরা প্রথমে “ঘুম’ হয়, সিঞ্চল পাহাড়কে ডাইনে ফেলে, কালিম্পাঙ্গের পথে অগ্রসর হতে লাগলুম। রাস্তায় কত ভুটিয়া সুন্দরী এক কপাল খায়ের মেখে, দুধের চোঙ্গা ঘাড়ে করে নিজেদের বস্তিতে ফিরছে। সহিসগুলো শিস্য দিতে দিতে ঘোড়ার পিছনে পিছনে ছুটতে লাগল। ( ( ) আমরা বাড়ী থেকে বেরিয়েছিলুম। বিকেল চারটিয়; যখন ছ’টা বাজল, তখন ঘোড়ার মুখ ফিরিয়ে নিলুম দাৰ্জিলিংয়ের দিকে । একে শীতের দেশ তার উপর আবার শীতকাল, তাই যখন দিনের আলো পড়ে এলো, তখন বাড়ী ফেরাই সুযুক্তির কাজ মনে করলুম। আমি পূর্বেই বলেছি, আমরা মুখে রাজা-উজীর মারতে প্ৰস্তুত থাকলেও, আসলে ছিলুম অতি সাবধানী লোক ; সুতরাং পাহাড়ের দেশে অচেনা পথে ঘোড়া দাবড়ে বেড়াতে আমাদের উৎসাহ দু’ঘণ্টার মধ্যেই কমে এসেছিল। কালিম্পাঙ্গের দিকে বােধ হয় বেশি দূর অগ্রসর হইনি, কারণ পথটা উৎরাই পথ, তাই ঘোড়াগুলোকে সিধে দুলকির চালেই চালিয়েছিলুম; নইলে সেগুলো হেঁচট খেয়ে পড়তে পারত। ঘোড়া ত ঘোড়া, ঢালু। উৎরাই পথে মোটর গাড়ীরও বেগ সংবরণ করতে হয়। ফেরার পথে আমরা চাল একটু বাড়িয়ে দিলুম, আর আধা ঘণ্টার মধ্যেই সিঞ্চল পাহাড়ের পাদদেশে এসে পড়লুম। মনে হল, ঘরে এসে পৌঁছলুম। জানা জায়গাকে বিদেশ কিম্বা দূরদেশ বলে কখনও মনে