পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার-ইয়ারী-কথা Moy আমি তখন নিশীতে-পাওয়া লোকের মত জ্ঞানহারা হয়ে চলছিলুম। তার সকল কথা আমার কানে ঢুকলেও, মনে ঢুকছিল না। তাই আমি তার হাসির উত্তরে বললুম—“তুমি না চাইতে পাের, কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে আবার দেখা করতে চাই ।” —“কেন ? আমার সঙ্গে তোমার কোনও কাজ আছে ?” —“শুধু দেখা-করা ছাড়া আর কোনও কাজ নেই!--আসল কথা এই যে, তোমাকে না দেখে আমি আর থাকতে পারব না।” -“এ কথা যে-বইয়ে পড়েছ সেটি নাটক না। নভেল ?” —“পরের বই থেকে বলছি নে, নিজের মন থেকে। যা বলছি তা সম্পূর্ণ সত্য।” -“তোমার বয়সের লোক নিজের মন জানে না ; মনের সত্য-মিথ্যা চিনতেও সময় লাগে । ছোট ছেলের যেমন মিষ্টি দেখলে খাবার লোভ হয়, বিশ-একুশ বৎসর বয়সের ছেলেদেরও তেমনি মেয়ে দেখলেই ভালবাসা হয়। ও-সব হচ্ছে যৌবনের দুষ্ট ক্ষিধে।” —“তুমি যা বলছি তা হয় তা সত্য। কিন্তু আমি জানি যে তুমি আমার কাছে আজ বসন্তের হাওয়ার মত এসেছি, আমার মনের মধ্যে আজ ফুল ফুটে উঠেছে।” -'s acts charts season flower, 9(8° 3.3 list, -ও-ফুলে কোনও ফল ধরে না ।” —“যদি তাই হয় ত, যে ফুল তুমি ফুটিয়েছ। তাঁর দিকে মুখ ফেরাচ্ছ কেন ? ওর প্রাণ দুদণ্ডের কি চিরদিনের, তার পরিচয় শুধু ভবিষ্যৎই দিতে পারে ।” এই কথা শুনে সে একটু গম্ভীর হয়ে গেল। পাঁচমিনিট চুপ করে থেকে বললে—“তুমি কি ভাবচ যে তুমি পৃথিবীর পথে আমার পিছু-পিছু চিরকাল চলতে পারবে ?” ---“আমার বিশ্বাস পারব।” —“আমি তোমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি তা না জেনে ?” -“তোমার আলোই আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে।”