ঘোষালের হেঁয়ালি } বলে। প্রায় তার সমবয়সী, বছর দুত্তিনের বড় হবে। এ বাড়ীতে তার কাজ হচ্ছে রাণীমার কাছে গল্প করা, কীর্তন গাওয়া ও চৈতন্যচরিতামৃত ইত্যাদি বৈষ্ণব গ্ৰন্থ সব তীকে পড়ে শোনান, আর রাণীমার নেপথ্যবিধান করা। কিন্তু রাজবাড়ী এসেও তার চাল বিগড়ে যায়নি। সে পরণপূরিচ্ছদে আহার-বিহারে বােষ্টমী কায়দা পূরো বজায় রেখেছে। তার পরণে একখানি চাঁপা ফুলের রঙের তসরে শাড়ী, গায়ে নামাবলী, গলায় তুলসী কাঠের মালা, নাকে রসিকলি, একরাশ ঢেউখেলান চুল কপালের ডান ধারে চূড়ো করে বাঁধা । হঠাৎ দেখলে মনে হয় একটি জীবন্ত ছবি। রাধিক একবার অভিমান করে কৃষ্ণকে বলেছিলেন যে, “আপনি হইয়ে শ্ৰীনন্দের নন্দন, তোমারে করিব রাধা।” শ্ৰীনন্দের নন্দন যদি হঠাৎ মেয়ে হয়ে যেতেন, তাহলে তাঁর রূপ হত। ঠিক সখীরাণীর মত । সখীরাণীর দৌত্য তাকে দেখে আমি একটু চমকে উঠে জিজ্ঞাসা করলুম। :- -এ অবেলায় তোমার হঠাৎ আগমনের কারণ কি ? —আমি নিজের গরজে আসিনি, এসেছি মীনারাণীর দূত হয়ে । —মীনাক্ষী দেবীর, থুড়ি, রাণীমার কি হুকুম ? —আজি সন্ধ্যেয় তোমাকে গানগল্প করতে হবে তঁরা সভায়। -সে সভা কি রকম সভা ? --মেয়ে-মজলিস। -সে মজলিসে বােধ হয় নিষ্পরুিষ নাটকের অভিনয় হয় ? -ধরে নাও যে তাই হয় । —শুনেছি পুরাকালে কোন বীরপুরুষ “একাকী হয়।মারুহা জগাম গহনং বনম।” আমাকেও দেখছি তীর পদানুসরণ করতে হবে। --কি বলছি, ভাষায় বল। এ কথা শুনে আমি বললুম! :- —তুমি দেখছি এখন কথায় কথায় সংস্কৃতের ফোঁড়ন দাও।