পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शक्षुकाढि ( S) মন্ত্রশক্তিতে তোমরা বিশ্বাস কর না, কারণ আজকাল কেউ করে না। ;-কিন্তু আমি করি। এ বিশ্বাস আমার জন্মেছে, শাস্ত্র পড়ে নয় --মন্ত্রের শক্তি চোখে দেখে । চোখে কি দেখেছি, বলছি। দাঁড়িয়েছিলুম। চণ্ডীমণ্ডপের বারান্দায়। জন দশ-বারো লেঠেল জমায়েত হয়েছিল পূব দিকে, ভোগের দালানের ভগ্নাবশেষের সুমুখে। পশ্চিমে শিবের মন্দির, যার পাশে বেলগাছে একটি ব্ৰহ্মদৈত্য বাস করতেন, র্যার সাক্ষাৎ বাড়ীর দাসী চাকরাণীরা কখনও কখনও রাত দুপুরে পেতেন,-ধোঁয়ার মত র্যার ধড়-আর কুয়াসার মত র্যার জটা। আর দক্ষিণে পূজোর আঙিনা-যে আঙিনায় লক্ষ বলি হয়েছিল বলে একটি কবন্ধ জন্মেছিল। একে কেউ দেখেননি, কিন্তু সকলেই ভয় করতেন। লেঠেলদের খেলা দেখবার জন্য লোক জুটেছিল কম নয়। মনিরুদি সর্দার, তার সৈন্য-সামন্ত কে কোথায় দাঁড়াবে তারই ব্যবস্থা করছিল। কি চেহারা তার। গৌরবর্ণ, মাথায় ছ’ফুটের উপর লম্বা, পাকা দাড়ি, গোঁফ-ছাঁটা । সে ছিল ও-দিগরের সব সেরা লকড়িওয়ালা । এমন সময় নায়েব বাবু আমাকে কানে কানে বললেন-“ঈশ্বর পাটনীকে এক হাত খেলা দেখাতে হুকুম করুন না। ঈশ্বর লেঠেল নয়, কিন্তু শুনেছি কি লাঠি, কি লক্ড়ি, কি সড়কি-ও হাতে নিলে কোন লেঠেলই ওর সুমুখে দাঁড়াতে পারে না। আপনি হুকুম করলে ও না বলতে পারবে না, কারণ ও আপনাদের বিশেষ অনুগত প্ৰজা।” এর পর নায়েব বাবু ঈশ্বরকে ডাকলেন। ভিড়ের ভিতর থেকে একটি লম্ব ছিপছিপে লোক বেরিয়ে এল। তার শরীরে আছে শুধু হাড় আর মাস-চর্বি এক বিন্দুও নেই। রঙ তার কালো অথচ দেখতে সুপুরুষ।