পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८ोप्लेम ९ 6लाप्लेन 88. কানে এল আমাদের মালী চিনিবাসের গলার আওয়াজ। সে তারস্বরে 'নিকালো নিকালো” বলে চেঁচাচ্ছে। বুঝলুম যার প্রতি এ আদেশ হচ্ছে, সে পশু নয়-মানুষ। এই গোলমাল শুনে আমি ও আমার এক আত্মীয় উপেন-দ দুজনে সেখানে ছুটে গেলুম। গিয়ে দেখি আস্তাবলে গাড়ীখানার মেঝেয় দুটি লোক বসে আছে। দুজনেই সমান অস্থিচর্মসার, আর দুজনেই মুমূর্ষ। রোগেই হোক, উপবাসেই হােক, তারা শুকিয়ে-মুকিয়ে আমচুর হয়ে গেছে। তারা যে চিনিবাসের কথা অমান্য করছে, তার কারণ তাদের নড়বার চড়বার শক্তি নেই। এমন কঙ্কালসার মানুষ জীবনে আর কখনও দেখিনি। তারা যে এখানে চলে এল কি করে, তা বুঝতে পারলুম না। বোধ হয় আকাশ থেকে পড়েছিল। উপেন-দা এদের দেখবামাত্র চিনিবাসের সঙ্গে যোগ দিয়ে “বেরিয়ে যাও” বলে চীৎকার করতে লাগলেন। আমি ও দুজনকেই থামালুম। আমি মনিব, সুতরাং আমি এক ধমক দিতেই চিনিবাস চুপ করলে। আর যদিও আমি তখন ফোর্থ ক্লাসে পড়ি, আর উপেন-দা বি. এ. পড়েন, তবু তিনি জানতেন যে মা আমার কথা শোনেন, তঁর কথা উপেক্ষা করেন। তিনি ভাবতেন তার কারণ অন্ধ মাতৃস্নেহ, কিন্তু আসলে তা নয়। তার যথার্থ কারণ, মা ও আমি উভয়েই এক প্রকৃতির লোক ছিলুম। অপর পক্ষে উপেনদার মতে, নিজের তিলমাত্র অসুবিধে করে অপরের জন্য কিছু করা অশিক্ষিত নিবুদ্ধিতার লক্ষণ। সে যাই হােকু, আগন্তুক দুটিকে জিজ্ঞাসা করে বুঝলুম যে, তারা দুজনে 'দেশকা” ভাই। কিন্তু কোন দেশ যে তাদের দেশ, তা তারা বলতে পারে না ; কারণ তাদের নাকি “কুছ ইয়াদ নেই।” তাদের আছে সুধু পেটে ক্ষিধে, আর মনে বেঁচে থাকবার ইচ্ছে। তারা আসছে বহুদূর থেকে, আর দুদিন আমাদের এখানে থাকতে চায়; আর তাদের নাম ঝোট্টন ও লোট্টন। আমি সব দেখে-শুনে বললুম-“আচ্ছা, তুমিলোক হিয়ারহেনে সকতা।” তারপর মার কাছে গিয়ে তঁর অনুমতি নিলুম। উপেন-দা মাকে ভয় দেখালেন যে ও দুজন ডাকাত, আর (tay