পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8VR १छनS$iश् আলাপ হল-প্রধানত দাৰ্জিলিংয়ের আবহাওয়ার বিষয়। কথায় কথায় শিকারের কথা এসে পড়ল। আমিও অকারণ পশুপক্ষী গুলি করে মারি শুনে, তিনি আমাকে তঁর জাতভাই মনে করে মহা খাতির করতে লাগলেন। আর বললেন-তোমরা যদি সব শিকারী হয়ে ওঠ, তাহলে বাঙ্গালীরা আমাদের কাছে অত নগণ্য হয়ে থাকবে না। আমি বললুম। --তার আর সন্দেহ কি ?-যদিচ মনে মনে তঁর কথায় সায় দিলুম না। আর একটু এগিয়ে দেখি যে, টুং ও সোনাদার মধ্যে রাস্তা এক জায়গায় ভেঙে গিয়েছিল, আর সদ্য মেরামত হয়েছে। তাই ট্রেন পা টিপে টিপে চলতে আরম্ভ করলে। আগে ছুটেছিল ঘোড়ার মত, এখন তার হল গজেন্দ্ৰগমন। পাহাড়ী মেয়েরা দশবারো মণ ওজনের পাথর সব পিঠে ঝুলিয়ে অবলীলাক্রমে নিয়ে আসছে ও পথের ধারে জড় করছে -আর সেই সঙ্গে মহা ফুর্তি করে গান গাচ্ছে। আমি অবাক হয়ে এদের এই ব্যবহার দেখছি দেখে সাহেব বললেন-“এরা সব সিপাহীদের মা, বোন ও স্ত্রী। এদের হাড় এত মজবুত না হলে কি বেঁটেখাটাে গুর্থীরা এমন মজবুত সিপাহী হতে পারত ?” তারপর একটি সতের আঠার বৎসরের পাহাড়ী মেয়ে গাড়ীর কাছে এসে বললে, “সাহাব, একঠো সিগারেট মাঙতা।” সাহেব তিলমাত্র দ্বিধা না করে তাকে একটি সিগারেট দিলেন। মেয়েটি অমনি আহিলাদে হেসেই অস্থির । - তারপর সাহেব বললেন, “পাহাড়ীদের আর একটা মস্ত গুণ এই যে, এরা ছিচকে চোর নয়। আমি কার্সিয়ংয়ে গাড়ীতে একটা খোলা টিন রেখে গিয়েছিলুম এই ভরসায় যে, এরা তার একটিও ছোবে না। ছিচকে চুরিতে ওস্তাদ হচ্ছে উড়েরা-coward-এর জাত কিনা। কথাটা আমার মনে কঁাটার মত বিধল, কিন্তু আমি কিছুতেই মুখ ফুটে বলতে পারলুম না যে, আমিও ত তাই করেছি। বাধল আমার self.respect-এ, কিন্তু মনে মনে নিজের উপর ঘোর অভক্তি হয়ে গেল । তারপর থেকেই মনস্থির করেছি যে, যদি beg করতে হয় তাও