পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রগতিরহস্য 3°就 দু’কথায় বোঝান যায়; আর অনেক কথায় তার ব্যাখ্যা করতে গেলে, লোকে সে কথায় কৰ্ণপাত করবে না। প্রগতির প্রমাণ এই যে, আমি যদি বলি প্ৰগতি হয়নি, তবে লোকে বলবে-তুমি অন্ধ, আর না হয়ত তুমি সেকেলে কূপমণ্ডুক। দেখতে পােচ্ছ না যে, আমাদের কাব্যে ও চিত্রে, নৃত্যে ও গীতে কি পর্যন্ত প্ৰগতি হয়েছে ও হচ্ছে ? তুমি প্রমথ চৌধুরী দেখছ যে, আমরা আজও পরাধীন ও পরবশ ;-কিন্তু ভুল যােচ্ছ যে, আমাদের পরাধীনতাই আমাদের সকল প্রগতির মূল, আর তুমিও ঐ প্রগতির জোয়ারে খড়কুটাের মত ভেসে চলেছি। আমি বলি-তথাস্তু। এখন জিজ্ঞাসা করি, দেশে প্ৰগতি আনলে কে ? যদি বল ইংরেজ, তাহলে কথাটা ঠিক হবে না। ইংরেজ ত আমাদের প্রগতির পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইণ্ডিয়া অ্যাকটের বেড়া তুলে। এর পর আমাদের প্রগতির উল্টোরথ টানতে হবে। তবে কি রামমোহন রায় এই প্রগতির রথ নূতন পথে চালিয়েছেন ? অবশ্য এ পথ রামমোহন প্রথম আবিষ্কার করেন। তার পর বহু লোক এই রথের দড়ি টেনেছেন। এই শ্রেণীর দুটি লোকের কথা তোমাদের শোনাব ; তার মধ্যে একজন ছিলেন প্রগতির নীরব কর্মী, আবু একজন নীরব ভাবুক। ( ७ ) আমি ছেলেবেলায় একটা মফঃস্বলের সহরে বাস করতুম, লেখাপড়া করবার জন্য। সেকালে উক্ত সহরে দু’জন গণ্যমান্য মুখুয্যে মশায় ছিলেন। একজনের ছিল অগাধ টাকা, আর একজনের ছিল অগাধ বিদ্যে-দুই-ই স্বেপার্জিত; কেননা উভয়েই ছিলেন দরিদ্রসন্তান, কিন্তু উভয়েই self-help-এর মন্ত্র সাধন করে একজন হয়েছিলেন ধনী, অপরটি বিদ্বান । কেনারাম মুখুয্যে কোন জমিদারের মেয়ে বিয়ে করে, তীর শ্বশুরকুলের দত্ত মাসহারার টাকা বাঁচিয়ে, সে উদ্ধৃত্তি টাকা সুদে খাটাতেন। আমি এ কথা জানতুম এই সূত্রে যে, আমাদের মত লোকের অর্থাৎ