পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

岔切 外邸不笨 থাকে, তা আমি জানতুম না, কিন্তু আমি এটা জানতুম যে, W থেকে B যাবার রাস্তায় কোথায়ও না কোথায়ও তার দেখা পাব । B-র সীমাতে পা দেবামাত্রই দেখি, একটি স্ত্রীলোক একটু উতলাভাবে রাস্তায় পায়চারি করছে। দূর থেকে তাকে চিনতে পারিনি, কেননা ইতিমধ্যে “রিণী” তার পোষাক বদলে ফেলেছিল। সে কাপড়ের রংয়ের নাম জানিনে, এই পর্যন্ত বলতে পারি যে সেই সন্ধের আলোর সঙ্গে সে এক হয়ে গিয়েছিল-সে রং যেন গোধূলিতে ছোপানো। আমাকে দেখবামাত্র “রিণী।” আমার দিকে পিঠ ফিরিয়ে ছুটে পালিয়ে গেল। আমি আস্তে আস্তে সেই দিকে এগোতে লাগলুম। আমি জানতুম যে, সে এই গাছপালার ভিতর নিশ্চয়ই কোথাও লুকিয়ে আছে। —সহজে ধরা দেবে না-একটু খুঁজে পেতে তাকে বার করতে হবে। আমি অবশ্য তার এ ব্যবহারে আশ্চর্য হয়ে যাইনি, কেননা এতদিনে আমার শিক্ষা হয়েছিল যে, “রিণী” যে কখন কি ব্যবহার করবে, তা অপরের জানা দূরে থাক, সে নিজেই জানত না। আমি একটু এগিয়ে দেখি, ডান দিকে বনের ভিতর একটি গলি, রাস্তার ধারে একটি oak গাছের আড়ালে “রিণী।” দাড়িয়ে আছে, এমন ভাবে যাতে পাতার ফাঁক দিয়ে ঝরা আলো তার মুখের উপর এসে পড়ে। আমি অতি সন্তৰ্পণে তার দিকে এগোতে লাগলুম, সে চিত্র-পুত্তলিকার মত দাঁড়িয়েই রইল। তার মুখের আধখানা ছায়ায় ঢাকা পড়াতে, বাকি অংশটুকু স্বর্ণমুদ্রার উপর অঙ্কিত গ্রীকরমণীমূর্তির মত দেখাচ্ছিল-সে মূর্তি যেমন সুন্দর, তেমনি কঠিন। আমি কাছে যাবামাত্র, সে দু’হাত দিয়ে তার মুখ ঢািকলে। আমি তার সুমুখে গিয়ে দাঁড়ালুম। দুজনের কারও মুখে কথা নেই। কতক্ষণ এ ভাবে গেল জানিনে । তারপর প্রথমে কথা অবশ্য “রিণী”ই কইলে-কেননা সে বেশিক্ষণ চুপ করে থাকতে পারত না--- বিশেষতঃ আমার কাছে। তার কথার স্বরে ঝগড়ার পূর্বাভাস ছিল। প্ৰথম সম্ভাষণ হল এই :-“তুমি এখান থেকে চলে যাও ! আমি তোমার সঙ্গে কথা কইতে চাইনে, তোমার মুখ দেখতে চাইনে।”