পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পসংগ্রহ সিদ্ধিলাভ করি এমন বিশ্বাস ছিল । অর্থাৎ যাতাই তাতের কাছে আসিবে তাছাড় প্রচুর হইয়া উঠিবে, সেদিনকার জলের স্থলের ভাবখান৷ এমনিতর ছিল। পার্ক সেদিন সৌন্দর্যসন্ন বসিয়াছিল। সে সৌন্দর্য কেবল । লতাপাতার নহে । সত্য কথা বলিতে কি, যে কোন ঋতুতেই হোক উদ্ভিজ্জ পদার্থের দিকে আমাদের তেমন আসক্তি নাই ; তৃণগুমোর সর্বপ্রকার স্বত্ব আমরা কবিজতি ব৷ যে কোন জাতির জন্য সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে চাড়িয়া দিতে পারি । আমরা তখন তাবোধ চাত্র ছিলাম, এবং স্ত্রীসৌন্দর্যের প্রতি আমাদের কিছু পক্ষপাত ছিল । হায় ! এখন বুদ্ধি বাড়িতেছে তবু । তাহা কাটাইয়া উঠিতে পারি নাই । সেদিন পুরনারীরা পাক বাহির হইয়াছিলেন। কেবল যে মেঘমুক্ত । সূর্যকিরণের প্রলোভনে তত বোধ হয় না। আমাদের মত পক্ষপাতীদের নেত্রপাতও সূর্যকিরণের মত আতপ্ত এবং সুখসেন্য । ওঁতারা বসন্তের। বনপথে নিজের সমস্ত বর্ণচ্ছটা উন্মলিত করিয়া বেড়ঙ্গতেডিালেন । সে। কি শুদ্ধমান লতাপাতা এবং রৌদ্রবায়ুর অনুরাগে ? আশা করি । তা নহে । আমাদের ঢক্ষের দুটি কালো তার৷ কালে৷ ভূঙ্গের মত একমুখ হইতে আর এক মুখের দিকে উড়িতেছিল । ত|হার কোন শূন্ধলা কোন নিয়ম, কোন দিম্বিদিক জ্ঞানমাত্র ছিল না। এমন সময় আমার পাশ্বস্ত বন্ধু অনুচ্চস্বরে বলিগ৷ উঠিলেন, “বাওঁ, দিব্য দেখিতে । বসন্তের একটা আচমকা নিঃশ্বাস ঠিক যেমন একেবারে ফুলোর উপরে গিয়া পাড়ে , তাহার বৃন্তটি অল্প একটু দোলা পায়, তাহার গন্ধ আমনি একটু উদ্যুসিত হইয়া৷ উঠে, তেমনি আমার বন্ধুর আত্মবিশ্বত বাহবাটুকু ঠিক জায়গায় ঠিক পরিমাণে আঘাত দিয়াছিল । তরুণী । পাস্তুনারী চকিত বিচলিত এীবা হেলাইয়া স্মিতহায্যে আমার সৌভাগ্যবান বন্ধুর প্রতি তাহার উজ্জ্বল নীল নেত্রের একটুখানি প্রসাদবৃষ্টি করিয়া গেল।