বাড়ির সন্ধান। আমি পড়তুম থার্ড নম্বর রীডার; মাস্টার মশায়কে জিগ্গেস করেছি, মাস্টার মশায় হেসে আমার কান ধ’রে টেনে দিয়েছেন।
জিগগেস করেছি ইরুকে, রাজবাড়িটা কোথায় বলো-না।
সে চোখ দুটো এতখানি ক’রে বলত, এই বাড়িতেই।
আমি তার মুখের দিকে চেয়ে থাকতুম হাঁ করে। বলতুম, এই বাড়িতেই!— কোনখানে আমাকে দেখিয়ে দাও-না।
সে বলত, মন্তর না জানলে দেখবে কী করে।
আমি বলতুম, মন্তর আমাকে ব’লে দাও-না। আমি তোমাকে আমার কঁচা-আম-কাটা ঝিনুকটা দেব।
সে বলত, মন্তর বলে দিতে মানা আছে।
আমি জিগ্গেস করতুম, ব’লে দিলে কী হয়।
সে কেবল বলত, ও বাবা!
কী যে হয় জানাই হল না।— তার ভঙ্গী দেখে গা শিউরে উঠত। ঠিক করেছিলুম, একদিন যখন ইরু রাজবাড়িতে যাবে আমি যাব লুকিয়ে লুকিয়ে তার পিছনে পিছনে। কিন্তু, সে যেত রাজবাড়িতে আমি যখন যেতুম ইস্কুলে। একদিন জিগ্গেস করেছিলুম, অন্য সময়ে গেলে কী হয়। আবার সেই ‘ও বাবা’। পীড়াপীড়ি করতে সাহসে কুলোত না।
আমাকে তাক লাগিয়ে দিয়ে নিজেকে ইরু খুব-একটা-কিছু মনে করত। হয়তো একদিন ইস্কুল থেকে আসতেই সে ব’লে উঠেছে, উঃ, সে কী পেল্লায় কাণ্ড!
ব্যস্ত হয়ে জিগ্গেস করেছি, কী কাণ্ড।
সে বলেছে, বলব না।
ভালোই করত— কানে শুনতুম কী একটা কাণ্ড, মনে বরাবর রয়ে যেত পেল্লায় কাণ্ড।