পাতা:গল্পসল্প - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চণ্ডী

 আরে ছি ছি, ওঁরা হলেন বড়োলোক, গামছা কখনো চক্ষেও দেখেন নি। টার্কিস তোয়ালে না হলে ওঁর এক পা চলে না।

 তা হলে?

 আমি ভাবছিলুম, ওঁর পাওনা তো বেশি নয়। অথচ, এত বাবুআনা চলে কী ক’রে।

 বোধ হয় ধার ক’রে!

 আজকালকার বাজারে ধার তো সহজ নয়, তার চেয়ে সহজ ফাঁকি।

 আচ্ছা, তুমি পুলিসে খবর দিয়েছিলে নাকি।

 না, তার দরকার হয় নি। সেটা বেরোল আমার স্ত্রীর ময়লা কাপড়ের ঝুড়ির ভিতর থেকে। কাউকেই বিশ্বাস করবার জো নেই।

 কী বল তুমি, ওটা ঠিক জায়গাতেই তো ছিল।

 আপনি সাদা লোক, আসল কথাটাই বুঝতে পারছেন না। আপনি জানেন তো আমার শালা কোচলুকে। কী রকম সে গায়ে ফুঁ দিয়ে বেড়ায়। পয়সা জোটে কোথা থেকে। কাজটি করছেন তিনি, আর গিন্নি সেটাকে বেমালুম চাপ দিয়েছেন।

 তুমি জানলে কী ক’রে।

 হ্যাঁ হ্যাঁ, এ কি জানতে বাকি থাকে।

 কখনো তাকে নিতে দেখেছ?

 যে এমন কাজ করে সে কি দেখিয়ে দেখিয়ে করে। এ দিকে দেখুন-না, পুলিস আছে চোখ বুজে, তারা যে বখরা নিয়ে থাকে। এইসব উৎপাত আরম্ভ হয়েছে যখন থেকে দেখা দিয়েছেন ঐ আপনাদের গান্ধি মহারাজ।

 এর মধ্যে তিনি আবার এলেন কোত্থেকে।

 ঐ যে তাঁর অহিংস্র নীতি। ধড়াধড় না পিটোলে চোরের চুরি-রোগ

৩১