পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ১০ )

গোলাপের গাছ, সেই গাছে একটি সুন্দর প্রস্ফুটিত গোলাপ। লাবণ্য সেই গোলাপটি তুলিতে হাত বাড়াইল! এই সময় সহসা কোথা হইতে পূর্ব্বেকার পরীটি আসিয়া বলিলেন, “ইহা তুলিও না, ঐ দেখ কত ধৈর্য্য ফুল ফুটিয়া রহিয়াছে—উহার একটি তোল, গোলাপ অপেক্ষা দেখ ঐ ফুলগুলি কত সুন্দর। গোলাপ ত তোমাদের বাগানে অনেক আছে। ঐ ধৈর্য্যফুল একটি তুলিয়া লইয়া যাও, উহা মর্ত্ত্যলোকে পাইবে না, ও ফুল তোমাদের বাগানে রাখিলে বাগান শোভা করিয়া চিরদিন নবীন ভাবে ফুটিয়া থাকিবে। উহা নন্দন কাননের ফুল, পৃথিবীর ফুলের মত শুকাইয়া যায় না। আর ঐ গোলাপের গাছ পৃথিবী হইতে আনিয়া এ কাননে রোপণ করা হইয়াছে, তুলিতে না তুলিতে শুকাইবে।”

 কিন্তু লাবণ্য তখন গোলাপ তুলিতে হাত বাড়াইয়াছে— হাতের ফুল ফেলিয়া কে আবার তখন দূরে যায়, সে বলিল— “অত দূরে আমি আর যাইতে পারি না”—বলিয়া তাড়াতাড়ি গোলাপটি ছিঁড়িয়া লইল,—তাড়াতাড়িতে গোলাপের কাঁটায় বিঁধিয়া তাহার হাত হইতে বিন্দু বিন্দু রক্তপড়িতে লাগিল, তখন সে গোলাপটি ফেলিয়া দিয়া কাঁদিতে আরম্ভ করিল। ' পরী বলিলেন “দেখ আমার কথা শুনিলে তোমাকে এই কষ্টভোগ করিতে হইতনা—ঐ যে ধৈর্য্যফুল দেখিতেছ উহার কাঁটা নাই। ভাল কথা না শুনিয়া কাজ করিলে দেখ কি রূপ বিপদে পড়িতে হয়—”

 পরীর এই উপদেশে লাবণ্য আরো রাগিয়া গেল, সে কাহারো উপদেশ শুনিতে ভাল বাসিত না। লাবণ্য রাগ করিয়া সেখান হইতে চলিয়া গেল। কিছু দূর গিয়া একবার ফিরিয়া দেখিল—পূর্ব্বের বাগানের আর চিহ্ণও নাই, তাহা হইতে অনেক